খোদ বিজ্ঞানীরাই চমকে গেছেন! রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে গেছেন! এই কি তবে পৃথিবীর উত্তরতম বিন্দু? এটাই কি সেই ওদাক দ্বীপ? না, কিছু পরেই ভুল ভাঙলো। একদল গবেষক দ্বীপটিতে পা রেখে এবং চারপাশে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছালেন যে, তাদের এতদিনের ধারণা ভুল ছিল। এতদিন পৃথিবীর উত্তর দিকের যে ভূখণ্ডটিকে তারা শেষ বিন্দু বলে মনে করতেন, আসলে সেটি শেষ বিন্দু নয়। তারও উত্তরে সম্পূর্ণ নতুন এক দ্বীপের দেখা মিলেছে এবার।
এতদিন ওদাককে ধরা হতো পৃথিবীর নর্থমোট অর্থাৎ সর্ব-উত্তরের ভূখণ্ড। এ দ্বীপটি গ্রিনল্যান্ডে অবস্থিত। চার দশকেরও বেশি সময় আগে ১৯৭৮ সালে প্রথমবার দ্বীপটির সন্ধান মেলে। চলতি বছরের জুলাই মাসে গবেষকরা ওদাক দ্বীপের নমুনা সংগ্রহের উদ্দেশে বের হয়েছিলেন।
যাত্রাপথে কোনো এক অচেনা স্থানে পৌঁছে তারা হঠাৎ আবিষ্কার করেন, এটা ওদাক নয়, যেখানে তারা এসেছেন সেটা একেবারেই নতুন এক দ্বীপ। যেখানে এর আগে কোনো মানুষের পদচিহ্ন পড়েনি। এই দ্বীপটিই পৃথিবীর উত্তর মেরুর সবচেয়ে নিকটবর্তী ভূখণ্ড, এমন দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। আবিষ্কৃত দ্বীপটির দৈর্ঘ্য ৬০ মিটার ও প্রস্থ ৩০ মিটার।
আর্কটিক অঞ্চলের বিশাল এক স্বায়ত্তশাসিত এলাকা গ্রিনল্যান্ড পৃথিবীর সর্ব উত্তরের দ্বীপ। ডেনমার্কের নিয়ন্ত্রণাধীন এ অঞ্চলে আরও অনেকগুলো দ্বীপ রয়েছে। নতুন আবিষ্কৃত দ্বীপটিও এগুলোরই একটি। যেটিকে পৃথিবীর সর্ব উত্তরের দ্বীপ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা।
গত জুলাই মাসে ডেনমার্ক ও সুইজারল্যান্ডের একদল গবেষক ওদাক দ্বীপ থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে বেরিয়েছিলেন। দ্বীপটির অবস্থানের ভূগোল অনুযায়ী জায়গামতো পৌঁছে হেলিকপ্টার অবতরণ করান তারা। তবে কর্দমাক্ত দ্বীপটিতে পা রেখে তারা বিস্মিত হয়ে যান। বুঝতে পারেন, এটা ওদাক দ্বীপ নয়। ওদাক দ্বীপের সঙ্গে এর কোনো মিলই খুঁজে পাচ্ছিলেন না তারা।
এরপরই গবেষক দলটি আর্কটিক অঞ্চলের এলাকা অবস্থান চিহ্নিতকরণ ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আর তখনই তারা জানতে পারেন, ওটি মোটেই ওদাক দ্বীপ নয়! তারা ওদাক দ্বীপ থেকে আরও ৮০০ মিটার উত্তরে চলে এসেছেন বলে কর্তৃপক্ষ তাদের জানান!
নতুন আবিষ্কৃত এ দ্বীপটি দেখতে কেমন? এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেনের গ্রিনল্যান্ডে অবস্থিত আর্কটিক স্টেশনের প্রধান গবেষক মর্টেন রাশখ জানিয়েছেন, দারুণ উত্তেজনার ছিল সেই কয়েকটা মিনিট। এরপরই আমরা বুঝলাম, যে জমিতে আমরা পা রেখেছি সেটা নুড়িপাথর আর কাদায় পরিপূর্ণ। দ্বীপটির চারপাশে শুধুই বরফ আর বরফ। পরিবেশও বেশ প্রতিকূল।
এই গবেষকের ভাষ্য- ‘দুর্ঘটনাবশত পৃথিবীর সর্ব উত্তরের দ্বীপটি আবিষ্কার করে ফেলেছি আমরা। এখন আর ওদাক দ্বীপকে পৃথিবীর সর্বোত্তর বিন্দু বলা যাবে না।’
তবে নতুন আবিষ্কৃত দ্বীপটি নিয়ে খুব বেশি আশা দেখছেন না বিজ্ঞানীরা। দ্বীপটি অদূর ভবিষ্যতেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বলে ধারণা তাদের।
সূত্র: জি নিউজ।
নদী বন্দর / পিকে