ডেইরী ও পোল্ট্রি ফিডের জন্য বিদেশ থেকে আমদানি করা সয়াবিন উপাদান বেনাপোল বন্দর দিয়ে রফতানি হচেছ ভারতে। ফলে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে দেশীয় ডেইরী ও পোল্ট্রি শিল্প।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৫/৬’শ সয়াবিন বোঝাই ট্রাক রফতানি হচেছ ভারতে। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ থেকে এসব সয়াবিন আমদানি করে তারা তৈরী করছে পোল্ট্রি পিড। আর সেই পোল্ট্রি ফিড পুনরায় রফতানি করা হচেছ বাংলাদেশে বলে কাস্টস সুত্র জানান।
গত ৫ সেপ্টেম্বর কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতর ( উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং) এর পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত এক অদেশে বাংলাদেশ থেকে সয়াবিন রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জরি করেন। যার স্মারক নাম্বার-৪৬৪৮। নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়, প্রাণীসম্পদ সেক্টরে ডেইরী ও পোল্ট্রি ফিডে সয়াবিন একটি অন্যতম উপাদন।
দেশীয় বাজারে বাৎসরিক সয়াবিনের প্রাপ্যতার ঘাটতি রয়েছে। দেশে ডেইরী ও পোল্ট্রি সেক্টরে চাহিদা মেটাতে বছরে প্রায় ১৫ লাখ মেট্রিক টন সয়াবিন প্রয়োজন। যার সিংভাগই আমদানি করতে হয়ে বিদেশ থেকে। সয়াবিন রফতানি করলে দেশে ডেইরী ও পোল্ট্রি শিল্পে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। বাড়বে পোট্রি ফিডের মূল্য।
নিষেধাজ্ঞা জারির পরপরই বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সব ধরনের সয়াবিন রফতানি বন্ধ করে দেয়। ফলে বেনাপোল বন্দ র এলাকায় ২ কি:মি: এলাকা জুড়ে প্রধান সড়কের ওপর সৃস্টি হয় স্মরনকালের ভয়াবয় যানজট। বৃদ্ধি পায় জনদূর্ভোগ।
গত ৯সেপ্টেম্বর কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতর ( উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং) এর পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত আর এক অদেশে সয়াবিন রফতানির ওপর নিষধাজ্ঞা প্রত্যাহর করে পত্র জারি করে। যার স্মারক নাম্বার -৪৭৬৩। নিষেধাজ্ঞা জারির পর বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে।
আমদানিকারক ব্যবসায়ী অব্দুল লতিফ জানান, বিদেশ থেকে আমদানি করা সয়াবিন দেশের চাহিদা না মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করায় ডেইরী ও পোল্ট্রি শিল্প পড়েছে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন শতশত ট্রাক সয়াবিন রফতানি হচেছ ভারতে। দেশের ডেইরী ও পোল্ট্রি শিল্পকে বাঁচাতে এই মুহুর্তে সয়াবিন রফতানি বন্ধ করা খুবই জরুরী।
পোলিট্র ফিড আমদানিকারক খুরশিদ জাহান জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন শতশত ট্রাক সয়াবিন রফতানি হচ্ছে ভারতে। এতে করে দেশীয় ডেইরী ও পোল্ট্রি শিল্প ঝুকিতে পড়বে। মূল্য বৃদ্ধি পাবে দেশীয় পোল্ট্রি ফিডের। আমরা সয়াবিন রফতানি বন্ধ করার জোর দাবি জানাচিছ।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতর ( উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং) এর পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, প্রথম চিঠির পরে আমরা আরো একটি চিঠি ইস্যু করে ফের রফতানির অনুমতি দিয়েছি। লাইফ স্টকের ডিজি সয়াবিন রফতানির বিষয়টি নিরুৎসাহিত করার পক্ষে আমাদেরকে অবহিত করেছেন। আমি বাধ্য হয়েই পুনরায় রফতানির অনুমতি দিয়েছি। এর ফলে দেশীয় বাজারে ডেইরী ও পোল্ট্রি খাবারের দাম কেজি প্রতি ১৫/২০ টাকা বেড়েছে, আরো দাম বাড়তে পারে।
বেনাপোল কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার শামিমুর রহমান জানান, কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতর খামারবাড়ি থেকে সয়াবিন রফতানি বন্ধের জণ্য বেনাপোল কাস্টমস হাউসকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আবার একই অফিস থেকে আর একটি চিঠি দিয়ে সয়াবিন রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। দেশীয় পোল্ট্রি ও ডেইরী একটি অন্যতম উপাদন সয়াবিন যার বেশীরভাগ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।
নদী বন্দর / এমকে