মঞ্চটা সাজিয়ে দিয়েছিলেন বোলাররা। শুধু হেঁটে ওঠার কাজটা বাকি ছিলো ব্যাটসম্যানদের জন্য। দক্ষতার সঙ্গেই তা করে দেখালো কলকাতা নাইট রাইডার্সের ব্যাটসম্যানরা। বোলারদের সাজানো মঞ্চে দলকে উদ্ভাসিত এক জয় এনে দিলেন দুই ওপেনার শুবমান গিল ও ভেংকটেশ আইয়ার।
আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফিরতি পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ব্যাঙ্গালুরুকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে কলকাতা। আগে ব্যাট করে বরুণ চক্রবর্তী ও আন্দ্রে রাসেলের তোপে মাত্র ৯২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল ব্যাঙ্গালুরু। ম্যাচ জিততে মাত্র ১০ ওভার লেগেছে কলকাতার।
গত মে মাসে করোনাভাইরাসের কারণে স্থগিত হওয়ার আগে খেলা সাত ম্যাচের পাঁচটিতে জিতে রেখেছিল ব্যাঙ্গালুরু। আজ কলকাতাকে হারাতে পারলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে যেতো বিরাট কোহলির দল।
কিন্তু তা আর হলো কোথায়! উল্টো প্রথম পর্বে সাত ম্যাচে ২ জয় পাওয়া কলকাতার জন্য বড় এক পাওয়া হিসেবেই এলো ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে জয়টি। যার সুবাদে প্লে-পফে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখলো ইয়ন মরগ্যানের দল। আট ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ৬ পয়েন্ট।
মাত্র ৯৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই ৮২ রান যোগ করেন গিল ও ভেংকটেশ। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে এ জুটি প্রথম পাওয়ার প্লে’তেই তোলে ৫৬ রান। যা অনেকটাই নিশ্চিত করে দেয় জয়। একপর্যায়ে মনে হচ্ছিলো পুরো ১০ উইকেটেই জিতবে কলকাতা।
কিন্তু ইনিংসের দশম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টায় লং অফ বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন গিল। তার ব্যাট থেকে আসে ৬ চার ও ১ ছয়ের মারে ৩৪ বলে ৪৮ রানের ইনিংস। ইয়ুজভেন্দ্র চাহালের করা সেই ওভারেই তিনটি চার মেরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন আরেক ওপেনার ভেংকটেশ।
আজই প্রথম আইপিএল ম্যাচ খেলতে নামা ভেংকটেশ শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ২৭ বলে ৪১ রান করে। তার ইনিংসে ছিলো ৭ চার ও ১ ছয়ের মার। গিলের বিদায়ের পর আন্দ্রে রাসেল উইকেটে এলেও, কোনো বল মোকাবিলার সুযোগ পাননি।
এর আগে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলারদের তোপে মাত্র ৯২ রানেই গুটিয়ে যায় কোহলির দল, তাও কি না ইনিংসের ১ ওভার বাকি থাকতেই। টস জিতে ব্যাট করতে নামাই যেন কাল হয়েছে ব্যাঙ্গালুরুর। শুরুতেই তারা হারিয়ে বসে কোহলিকে (৫)। প্রসিধ কৃষ্ণার দারুণ এক ডেলিভারি মিস করে এলবিডব্লিউ হন ব্যাঙ্গালুরু অধিনায়ক।
সেই ধাক্কা কিছুটা সামলে উঠেছিলেন দেবদূত পাডিক্কেল আর অভিষিক্ত শ্রীকর ভরত। কিন্তু পাডিক্কেল (২০ বলে ২২) পাওয়ার প্লের শেষ বলে আউট হওয়ার পরই খেই হারিয়ে ফেলে ব্যাঙ্গালুরু।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (১৭ বলে ১০), এবি ডি ভিলিয়ার্স (০), শচিন বেবি (৭), ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গারা (০) দলের বিপর্যয় সামলাতে পারেননি। ডি ভিলিয়ার্স বোল্ড হন আন্দ্রে রাসেলের বলে।
তবে বড় ধাক্কাটা দিয়েছেন মূলত বরুণ চক্রবর্তী। এই বিস্ময় লেগস্পিনার বোল্ড করেন ম্যাক্সওয়েলকে, এরপর ফেরান হাসারাঙ্গা আর শচিন বেবিকে। আবার বলে হাত ছুঁইয়ে দিয়ে ননস্ট্রাইক এন্ডে এক ব্যাটসম্যানকে রানআউটও করেছেন তিনি।
৪ ওভারে ১৩ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছেন বরুণ। ৩ ওভারে ৯ রান খরচায় ৩ উইকেট শিকার ডানহাতি পেসার আন্দ্রে রাসেলের।
নদী বন্দর / পিকে