নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলায় দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও তিনমাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৪ অক্টোবর) বেলা ১১টায় নোয়াখালী জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জয়নাল আবেদিন চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মামুনুর রশিদ লাবলু রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামি দেলোয়ার হোসেন দেলু ও আবুল কালাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বাদল।
এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। পরে ১৮ আগস্ট আসামিদের উপস্থিতিতে বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, বিবস্ত্র করে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় গত ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে দেলোয়ার হোসেন ও আবু কালামকে আসামি করে বেগমগঞ্জ থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় অভিযুক্ত দুই আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) স্থানান্তর করা হয়।
২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাতে একলাশপুর ইউনিয়নের ওই নারীর আগের স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে তার বাবার বাড়ি যান। স্থানীয় মাদককারবারি ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন দেলু বিষয়টি দেখতে পান। পরে রাত ১০টার দিকে দেলোয়ারের লোকজন ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে পরপুরুষের সঙ্গে অনৈতিক কাজের অভিযোগে ও তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে পিটিয়ে তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেন।
এর আগেও ওই গৃহবধূর ঘরে গিয়ে ও বিভিন্ন স্থানে নিয়ে দেলোয়ার তাকে ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। ওই বছরের ৪ অক্টোবর দুপুরে নির্যাতনের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে এ ঘটনায় নির্যাতিতার দায়েরকৃত নির্যাতন, ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলাটিও অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।
নদী বন্দর / জিকে