পুঁজিটা খুব বড় ছিলো না। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় মাত্র ১১৮ রানেই থেমে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। তবে এই অল্প রান নিয়েই অস্ট্রেলিয়াকে রীতিমতো কাঁপিয়ে দিয়েছে প্রোটিয়া বোলাররা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ম্যাচটি জিততে পারেনি তারা।
রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের পর লো স্কোরিং ম্যাচটি জিততে অস্ট্রেলিয়াকে খেলতে হয়েছে ১৯.৪ ওভার। মাত্র ২ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটের জয় পেয়েছে অসিরা। শেষদিকে ১৬ বলে ২৪ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেছেন মার্কাস স্টয়নিস।
১১৯ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই খোলসে ঢুকে যায় অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে সাজঘরে ফিরে যান অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারে মাত্র ২৮ রান তুলতেই হারায় ২ উইকেট।
ফর্মহীন ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার রয়েসয়ে শুরু করলেও ১৫ বলে ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি। তিন নম্বরে নামা ইনফর্ম ব্যাটার মিচেল মার্শও হতাশ করেন। তার ব্যাট থেকে আসে ১৭ বলে মাত্র ১১ রান। ইনিংসের ১০ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৫১ রান।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে দলকে ভালোভাবেই এগিয়ে নিচ্ছিলেন স্টিভেন স্মিথ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। কিন্তু দলীয় ৮০ রান স্মিথ (৩৪ বলে ৩৫) ও ৮১ রানে ম্যাক্সওয়েল (২১ বলে ১৮) সাজঘরের পথ ধরলে ফের বিপদে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
শেষ তিন ওভারে তাদের জয়ের জন্য বাকি থাকে ২৫ রান। মনে হচ্ছিল ম্যাচটি বের করে নেবে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু মার্কাস স্টয়নিস ও ম্যাথু ওয়েডের দায়িত্বশীল ব্যাটে দুই বল আগেই জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ওয়েড ১০ বলে ১৫ ও স্টয়নিস ১৬ বলে ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি প্রোটিয়াদের। পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারে মাত্র ২৯ রান করতেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। অবশ্য ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারটা দারুণই কেটেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার।
মিচেল স্টার্কের করা প্রথম বলেই দুই রান নেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। পরে তৃতীয় ও চতুর্থ বলে হাঁকান ব্যাক টু ব্যাক বাউন্ডারি। সেই ওভার থেকে আসে ১১ রান। কিন্তু এই শুরুটা ধরে রাখতে পারেননি প্রোটিয়া অধিনায়ক।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের করা দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান ৭ বলে ১২ রান করা বাভুমা। পরের ওভারের প্রথম বলে ইনফর্ম রসি ফন ডার ডুসেনকে কট বিহাইন্ড করেন জশ হ্যাজলউড।
মাত্র ১৬ রানে ২ উইকেট হারানো প্রোটিয়াদের চাপ আরও বাড়ে কুইন্টন ডি ককের অদ্ভুত বোল্ড আউটে। হ্যাজলউডের করা ইনিংসের পঞ্চম ওভারের প্রথম বলটি ছিলো লেগস্ট্যাম্পে খাটো লেন্থের ডেলিভারি। স্কুপ করার চেষ্টায় বল আঘাত হানে ডি ককের থাই প্যাডে।
ডি কক ভেবেছিলেন বল চলে গিয়েছে দূরে, তাই সিঙ্গেল নেয়ার ভঙ্গি করেন তিনি। কিন্তু বল তখন এক ড্রপ করে আঘাত হানে স্ট্যাম্পে, বিদায়ঘণ্টা বেজে যায় ডি ককের। আউট হওয়ার আগে ১২ বল খেলে মাত্র ৭ রান করতে পেরেছেন এ তারকা উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
পাওয়ার প্লে’র মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি প্রোটিয়াদের। তবে একপ্রান্ত আগলে ছিলেন এইডেন মারক্রাম। তিনি আউট হন ইনিংসের ১৮ নম্বর ওভারে গিয়ে। মারক্রামের ব্যাট থেকে আসে ৩৬ বলে ৪০ রানের ইনিংস।
এছাড়া হতাশ করেন হেনরিখ ক্লাসেন (১৩), ডেভিড মিলার (১৬), ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসরা (১)। শেষদিকে কাগিসো রাবাদা একটি করে চার-ছয়ের মারে ১৯ রান করে দলীয় সংগ্রহ একশ পার করানোর পাশাপাশি সর্বনিম্ন সংগ্রহের রেকর্ডও পার করিয়ে দেন।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে বল হাতে দুইটি করে উইকেট নিয়েছেন প্যাট কামিনস, অ্যাডাম জাম্পা ও মিচেল স্টার্ক। জশ হ্যাজলউড ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের শিকার একটি করে উইকেট।
নদী বন্দর / পিকে