চিকিৎসার জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর আবেদন প্রশ্নে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আমি বারবার একটা কথা বলছি দেশের আইনের বইয়ে এটা নেই। ওনারা (বিএনপি) যদি আমাকে এটা দেখাতে পারে, তাহলে তো আমরা বিবেচনা করতে পারি। কিন্তু এটা আইনের বই দেখাতে পারবে না, তাই বিবেচনার প্রশ্নেই আসে না।
আইনমন্ত্রী বলেন, যেহতু আইনে সুযোগ নেই। ওনারা আমাকে যত খুশি গালি দিতে পারেন। কিন্তু আমার কিছু আসে যায় না, আমি আইনানুযায়ী চলবো।
বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে বিএনপির সংসদ সদস্য জিএম সিরাজের বক্তব্যের জবাবে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী। এর আগে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে জিএম সিরাজ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মানবিক দিকবিবেচনায় দু’একদিনের মধ্যে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানান।
সিরাজ বলেন, অন্তত মানবিক কারণে খালেদা জিয়াকে দু’একদিনের মধ্যে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হোক। ম্যাডামের একটা কিছু হয়ে গেলে এর দায়ভার আজীবন আওয়ামী লীগকে বহন করতে হবে। কিন্তু আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার এ দাবিকে নাকচ করে দেন।
এসময় সংসদে উপস্থিত আওয়ামী লীগের নারী সংসদ সদস্যসহ অন্যরা হইচই শুরু করেন। স্পিকার তাদের উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন, আস্তে আস্তে মাননীয় সংসদ সদস্যরা।
এর আগে জিএম সিরাজ স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি জানেন, আমি বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য। আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী যিনি এ আসন থেকে বার বার নির্বাচিত হয়েছেন। তিন তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন যিনি, যার জীবনে কখনোই নির্বাচনে হারেননি, যার জন্য দেশবাসীর দোয়া করছেন। বিশেষ করে পোস্ট কোভিডের পর ম্যাডাম জিয়ার শারীরিক অবস্থা ক্রমান্বয়ে অবনতির দিকে যাচ্ছে, যা তাকে দিনে দিনে মৃত্যু মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তাই আমাদের আবেদন অতি দ্রুত জামিন দিয়ে ম্যাডামকে দু’একদিনের মধ্যেই বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হোক।
এরপর ফ্লোর নিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি সংসদ সদস্যের বক্তব্য শুনেছি। যা দুদিন আগে বলেছি তার পুনরাবৃত্তি করতে চাই না। আইনের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। আইন যা বলেছে সেই মুহূর্তে মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা যদিও সাজাপ্রাপ্ত এবং দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত রেখে তাকে বাইরে রাখা হয়েছে।
সংসদ সদস্য সিরাজের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যেহেতু সংসদ সদস্যরা শপথ নিয়েছেন। তারা নির্বাচন করেছেন বাংলাদেশকে বিশ্বাস করে। আমি বারবার একটা কথা বলছি দেশের আইনের বইয়ে এটা নেই। ওনারা যদি আমাকে দেখাতে পারেন, তাহলে তো আমরা বিবেচনা করতে পারি। কিন্তু এটা আইনের বই দেখাতে পারবেন না, তাই বিবেচনা করার প্রশ্ন আসে না।
তিনি বলেন, আমি জানি সংসদ সদস্য খালেদা জিয়ার ব্যাপারে যেসব শারীরিক তথ্য দিচ্ছেন তাকে কিন্তু সঠিকভাবে চিকিৎসা করা হচ্ছে এবং সেই চিকিৎসায় কে সন্তুষ্ট অসন্তুষ্ট সেটা ওনাদের ব্যাপার। কিন্তু একজন সাজাপ্রাপ্ত, যার সাজা স্থগিত রেখে মুক্তি দেওয়া হয়েছে ৪০১ ধারায়। সেই ৪০১ ধারায় কোনো বিধান নেই এটি নিষ্পত্তিযোগ্য বা নিষ্পত্তিকৃত আবেদনকে আবার পুনর্বিবেচনা করার। আর যেখানে আইনে সুযোগ নেই। ওনারা আমাকে যত খুশি গালি দিতে পারেন। কিন্তু আমার কিছু আসে যায় না, আমি আইনানুযায়ী চলবো।
নদী বন্দর / এমকে