সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় বৈদ্যুতিক শর্ট-সার্কিটের ফলে মারাত্মক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। এতে মানুষের জান-মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এসব অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে ছায়া তদন্ত করে। সিআইডির তদন্তে দেখা যায়, নকল ক্যাবল ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা পণ্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে অগ্নিকাণ্ডের অন্যতম কারণ।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রাজধানীর পুরান ঢাকার বংশাল এলাকায় প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত বিভিন্ন নামি-দামি ব্রান্ডের নকল বৈদ্যুতিক তার তৈরি হতো। পরে ওইসব নকল তার নবাবপুরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হতো। এক বান্ডিল আসল বিআরবি তারের সঙ্গে তিন বান্ডিল নকল তার সরবরাহ করা হতো।
এ ধরনের তিনটি কারখানায় সিআইডি অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নকল তার উদ্ধার করে। এ সময় নকল তার তৈরির কারখানা থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়।
আটকরা হলেন- সোহেল রানা, আবুল কালাম, রাজিব মোল্লা, জসিম উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম সুমন, নাজির হোসেন, শাহিন শেখ, মো. লিখন, মো. আরিফ ও হাবিবুল ইসলাম।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) পুরান ঢাকার বংশাল থানার ১৯/২ নম্বর কাজী আবদুল হামিদ লেনের চান্দনা মার্কেটের চতুর্থ ও ষষ্ঠ তলায় তিনটি কারখানায় অভিযান চালায় সিআইডি। অভিযানে তিনটি কারখানা থেকে বিপুল পরিমাণ নকল বিআরবি ক্যাবল ও বিজলী ক্যাবল পাওয়া যায়। এছাড়া নকল তার সম্বলিত ববিন, বিআরবি নকল তার তৈরির ডাইস ও মেশিন জব্দ করা হয়।
অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, অভিযানে আটকরা এ ধরনের বৈদ্যুতিক তার তৈরির ক্ষেত্রে কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। অভিযানে তিনটি কারখানা থেকে প্রায় তিন কোটি টাকার নকল তার জব্দ করা হয়।
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, এসব কারখানায় প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত নকল তার তৈরি করা হতো। পরে সেগুলো নবাবপুরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হতো। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিআরবি ও বিজলী নকল তার তৈরি করে আসছিলেন। এ ধরনের নকল তার ব্যবহারের ফলে শিল্প কলকারখানাসহ আবাসিক ভবনে মারাত্মক অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
এ ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের বংশাল থানায় ১৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।
নদী বন্দর / বিএফ