করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ায় শাহবাগের ফুল ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে। বর্তমানে শীত ঝাঁকিয়ে বসতে শুরু করায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গায়ে হলুদ, বিয়ে, সুন্নতে খাতনাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ধুম পড়েছে। ফলে শাহবাগে ফুলের পাইকারি বাজারে জমজমাট বেচাকেনা চলছে।
কাকডাকা ভোর থেকেই গোলাপ, রজনীগন্ধা, গাঁদা, লিলি, জারবেরা গ্লাডিওলাস, ক্যালনডুলা, অর্কিড, কিসিমসিমা মিম, জিপসি, কানডিশন, লিমু, চেরিগেন্দা এবং ওয়েস্টারসহ বিভিন্ন তরতাজা ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা অপেক্ষাকৃত কম দামে ফুল কিনতে ছুটে আসেন। দরদাম করে তাজা ফুল কিনে নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ছোটেন।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) ভোরে সরেজমিনে শাহবাগের এ ফুলের বাজার পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে হরেক নামের ও দামের ফুলের জমজমাট বেচাকেনা চলছে। শীতের ভোরে কুয়াশার কারণে হাই ভোল্টের বাতি জ্বালিয়ে রাখায় রঙিন ফুলগুলো আরও বেশি রঙিন দেখা যায়।
ফুল বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে বেচাকেনা ভালো হলেও আগের মতো কাঁচা ফুলের চাহিদা এখন আর নেই। আগে বিয়ে ও গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে প্রায় শতভাগ স্টেজ কাঁচা ফুল দিয়ে সাজানো হলেও বর্তমানে প্লাস্টিকের ফুল দিয়ে সাজানো হচ্ছে। ফলে আগের মতো ব্যবসায় লাভ নেই বলে একাধিক ব্যবসায়ী জানান।
হুমায়ুন কবীর নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, আগের তুলনায় ব্যবসা ভালো হলেও সন্তোষজনক নয়। শাহবাগে অধিকাংশ ফুল যশোর থেকে আসে। যশোরের বড় ফুলের আড়ৎ থেকে যে দামে ফুল কিনে আনেন সে দামেরও চেয়ে সামান্য লাভেই বিক্রি করতে হয়। কারণ ঢাকা শহরে ফুলের দোকানে ছেঁয়ে গেছে। তাছাড়া পচনশীল হওয়ায় সব দিন ব্যবসা সমান হয় না। তবে করোনাকালীন পরিস্থিতি সার্বিক বিবেচেনায় ব্যবসা এখন ভালো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শাহবাগ ক্ষুদ্র ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এম এ আবুল কালাম আজাদ। ভোর সাড়ে ৬টায় নিজে এসে শাহবাগে তার ফুলের দোকানের জন্য গোলাপ ফুল দরদাম করছিলেন। বিক্রেতা ৩০০টি গোলাপ ফুল ১ হাজার ১শ’ টাকার কম রাখা সম্ভব নয় বলে জানালেও তিনি দরদাম করে ১ হাজার টাকায় কেনেন।
নিজে উপস্থিত থেকে কেন ফুল কিনছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত তিনি ফুল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে মন্তব্য করেন। ফুল বা অন্য যেকোনো ব্যবসার ক্ষেত্রে কেনার ক্ষেত্রে লাভ করতে না পারলে বেচায় লাভ করা যায় না।
এ কারণে তিনি প্রতিদিন ফজরের নামাজ পড়ে নিজে এসে ফুল কিনে দোকানে নিয়ে সাজান। এখন বেচাকেনা কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, বর্তমানে ব্যবসা ভালো। ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ফুলের ব্যবসা ভালো হয়। সপ্তাহের বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার এ তিনদিন কনের ও বরের গায়ে হলুদ ও বিয়ে থাকে। এ সময় বেচাকেনা ভালো হয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
নদী বন্দর / এমকে