মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘আপনি আওয়ামী লীগ করেন, বঙ্গবন্ধুর কথা বলেন, জয় বাংলার কথা বলেন। কিন্তু আপনার ছেলে, ভাই, আত্মীয় কিংবা প্রতিবেশী জয় বাংলার কথা বলবে না, এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। সবাইকেই জয় বাংলার কথা বলতে হবে। আমাদের সচেতন হতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর শহীদ মতিউর রহমান পার্কে আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এতে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধা ও এ অঞ্চলে যুদ্ধে শহীদদের পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ধস নেমেছিল। পাকিস্তান একটি অকার্যকর দেশ। তাই তারা বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্র করার জন্যই দেশে ধর্ম নিয়ে রাজনীতিতে এখনও ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় মাত্র ২১ বছর। অন্যান্য দল ২৯ বছর ক্ষমতায় ছিল। তারা কতটুকু উন্নয়ন করতে পেরেছে?’
তিনি বলেন, ‘আজ শেখ হাসিনা জেগে থাকেন বলেই, আমরা শান্তিতে ঘুমাতে পারি। বঙ্গবন্ধু নেই, কিন্তু তিনি আমাদের মধ্যেই আছেন। জীবিত বঙ্গবন্ধুর চাইতে মৃত বঙ্গবন্ধু আরও শক্তিশালী। তিনি আমাদের সবার মধ্যেই আছেন।’
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন বুঝতে পেরেছিলেন, পাকিস্তানিরা বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না। অতএব আমাদের সংগ্রাম করে, যুদ্ধ করেই ক্ষমতা নিতে হবে। স্বাধীনতা অর্জন করতে হবে। আমাদের পক্ষে সে সময়ে বিশ্বব্যাপী জনমত তৈরি হয়েছিল। সেই প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা যুদ্ধের ডাক দেন। আমরা ৯ মাস যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছিলাম। কিন্তু ১৬ ডিসেম্বরও আমরা পূর্ণ বিজয় ও স্বাধীনতা পাইনি। কারণ, তখনও বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরেননি। জাতির পিতা দেশে ফেরার পরেই আমরা পরিপূর্ণ বিজয় পেয়েছিলাম।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘যে আমেরিকা আমাদের হেয় করেছিল, সেই দেশের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিজেই কেনিয়া গিয়ে বলেছিলেন, ‘ফলো শেখ হাসিনা, ফলো বাংলাদেশ।’ আমরা তার নেতৃত্বেই ২৬টি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছি। অন্য যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা কী করেছে। চারবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তারা এতিমের টাকা মেরে খেয়েছে। এটা আমার কথা নয়, এটা আদালতের কথা। যারা এতিমের টাকা মেরে খায়, তারাই দেশটাকে লুটেপুটে খায়। তারাই আজ আমাদের জাতীয় পতাকাকে খামচে ধরছে। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থেকে বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করবো। শেখ হাসিনা আমাদের জন্য কী না করেছেন।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান, ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মৃণাল কান্তি দাস প্রমুখ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর নেতা এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটির কর্মকর্তারা।
নদী বন্দর / এমকে