তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে উত্তরের সীমান্তঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামের মানুষ। মিলছে না সূর্যের দেখা। সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত হলেই বাড়ছে শীতের প্রকোপ। রাতভর ঝরছে কুয়াশা।
মঙ্গলবার সকালে কুড়িগ্রামের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজারহাট আবহাওয়া অফিস বলছে জেলাজুড়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।
শীত ও কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। শীতবস্ত্রের অভাবে ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়ছেন জেলার সাড়ে চার শতাধিক চর ও দ্বীপ চরের বাসিন্দারা। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন চরাঞ্চলের মানুষজন। শীতে গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।
সকাল থেকেই কাজের সন্ধানে রিকশা, ভ্যান ও ঘোড়ার গাড়ি চালক, দিনমজুরসহ ব্যবসায়ীদের শহরে আসতে দেখা গেছে। শীতবস্ত্রের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন চরাঞ্চলসহ বাঁধে আশ্রয় নেয়া মানুষজন। এসব এলাকার অধিকাংশ মানুষেরই নেই গরম কাপড়।
যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার বলেন, জেলা প্রশাসক দুই শতাধিক কম্বল ইউনিয়নের পোড়ার চর এলাকায় সম্প্রতি বিতরণ করেছেন। আমার ইউনিয়নে অগনিত চর ও দ্বীপ চর রয়েছে। অধিকাংশ মানুষই খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের। এসব মানুষের শীতবস্ত্র কেনার সামর্থ্য নেই। শীতবস্ত্রের অভাবে নিদারুণ কষ্টে আছে এরা। এখন পর্যন্ত কোনো শীতবস্ত্র না পাওয়ায় এসব অসহায় মানুষদের মাঝে বিতরণ করতে পারিনি।
পাঁচগাছি ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন সরকার বলেন, আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকাই চর। এসব এলাকার অধিকাংশ মানুষই নিম্ন আয়ের। শীতে খড়কুটো ও রোদের ওপর নির্ভরশীল এসব এলাকার মানুষ। কিন্তু সকাল থেকেই সূর্যের দেখা না মেলায় বিপাকে পড়েছেন তারা।
জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই সরকার জানান, সরকারিভাবে জেলার নয়টি উপজেলার জন্য বরাদ্দের ৩৫ হাজার ৭শ কম্বল ও ১ কোটি ৮ লাখ টাকা বিতরণ চলমান রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি সংগঠন মুসলিম এইড ২ হাজার ৭শ কম্বল বিতরণ করবে বলে জানতে পেরেছি।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, কুড়িগ্রাম জেলায় শীতের তীব্রতা বেড়েই চলছে। এতে করে তাপমাত্রা ক্রমশ কমে আসছে। জেলাজুড়ে চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।
নদী বন্দর / সিএফ