সকাল পৌনে ৮টা। মিরপুর-১ নম্বর শাহআলীবাগ এলাকা। মশককর্মী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ঠিকভাবে কাজ করছেন কি না, তা দেখতে হঠাৎ সেখানে হাজির হন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ সময় তিনি নানা অব্যবস্থাপনা দেখতে পান।
বুধবার (৫ জানুয়ারী) মেয়রের এমন পরিদর্শনের একটি ভিডিও ডিএনসিসির ফেসবুক পেজে লাইভ করেছেন তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তিদের একজন। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, শাহআলীবাগ এলাকার বিভিন্ন অলিগলি ঘুরে পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি দেখছেন মেয়র। এ সময় সড়ক-ফুটপাতে ইট, বালুসহ নির্মাণসামগ্রী, দোকান, বাসাবাড়ির সামনে ময়লা–আবর্জনা দেখে ক্ষোভপ্রকাশ করেন মেয়র।
ফেসবুকের ওই লাইভের ক্যাপশনে লেখা, অব্যবস্থাপনায় ভরপুর চারদিক। কাউকে অবহিত না করেই নিয়মিত এ অভিযান করবেন ডিএনসিসি মেয়র। ডিএনসিসির দায়িত্ব পালনে অবহেলা দেখলে দায়িত্বরত ব্যক্তিকে যেমন চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে, তেমনি নাগরিকদের অব্যবস্থাপনা দেখলেও সঙ্গে সঙ্গে নেওয়া হবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।
ভিডিওতে দেখা যায়, মেয়রের ঝটিকা পরিদর্শনে বাসিন্দাদের অনেকেই হতবাক হয়ে যান। ডেকে আনা হয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শককে। পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শকের কাছে সড়কে কেন বালু ফেলে রাখা হয়েছে, ফুটপাতে কেন ইট রেখে মানুষের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা হচ্ছে, দোকানের সামনে কেন ময়লা জমে আছে, এমন বিষয়ে কৈফিয়ত চান মেয়র। তখন পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক মেয়রকে জানান, সড়কে যারা নির্মাণসামগ্রী রাখছেন, তাদের একাধিকবার নোটিশ করা হয়েছে, কিন্তু তারা এগুলো সরাচ্ছেন না।
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ঘণ্টাখানেক এলাকার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখেন মেয়র। একপর্যায়ে মেয়রকে বলতে শোনা যায়, নগর পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব নাগরিকদেরও রয়েছে। দোকানিরা দোকান খোলার পর নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা না রেখে, তা রাস্তায় ফেলছেন। এ ময়লা নর্দমায় যাওয়ার পর সেখানে পানিপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। এসব না করার অনুরোধ জানান তিনি।
এমন ঝটিকা পরিদর্শনের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘শহরে নাগরিক সেবার কী অবস্থা, তা নগর ভবনে বসে বোঝা যায় না। প্রায়ই বিভিন্ন এলাকা থেকে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ আছে। সংশ্লিষ্টদের দিয়ে তা সমাধান করা হয়। কিন্তু তারপরও অভিযোগ কমছে না। তাই বাস্তব অবস্থা দেখতে কাউকে কিছু না জানিয়ে ঝটিকা পরিদর্শনে গিয়েছি। তিনি বলেন, নগরীকে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করতে হলে নগরবাসীকেও সহযোগিতা করতে হবে। এককভাবে কোনো সংস্থা অব্যবস্থাপনা দূর করতে পারবে না। এর মধ্যে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।