রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার থেকে ৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানি করবে সরকার। এ সংক্রান্ত দুইটি পৃথক প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯৩ কোটি ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার টাকা।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন।
আজকের বৈঠকে অনুমোদনের জন্য ১০টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের ৪টি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ৩টি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ২টি এবং সড়ক বিভাগের একটি প্রস্তাব ছিল। অনুমোদিত ১০টি প্রস্তাবে বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ৬৪০ কোটি ৮৮ লাখ ২৪ হাজার ৯৯৮ টাকা।
বৈঠক শেষে অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সামসুল আরেফিন। তিনি জানান, রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড থেকে সপ্তম লটে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি টন ইউরিয়া সার ৯৫৮ দশমিক ১৭ ডলার হিসাবে ৩০ হাজার টন সার আমদানিতে মোট ব্যয় হবে দুই কোটি ৮৭ লাখ ৪৫ হাজার ১০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২৪৬ কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার ৮৩৫ টাকা। সিসিইএ সভার অনুমোদনক্রমে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে দুই লাখ ১০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর অংশ হিসেবে এই সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হলো।
এছাড়া সভায় রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার থেকে ১৩তম লটে ৩০ হাজার টন বাল্ক প্রিল্ড (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি টন সারের দাম ৯৫৮ দশমিক ১৭ ডলার হিসাবে ৩০ হাজার টন সার আমদানিতে মোট ব্যয় হবে দুই কোটি ৮৭ লাখ ৪৫ হাজার ১০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২৪৬ কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার ৮৩৫ টাকা। এর আগে সিসিইএ সভার অনুমোদনক্রমে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে কাতার থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তিন লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
সভায় চট্টগ্রামের টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডের (টিএসপিসিএল) জন্য ২৫ হাজার টন রক ফসফেট (৭২ শতাংশ বিপিএল মিনিমাম) আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৯৪ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৮১ কোটি ৪৯ লাখ ৩১ হাজার ১২৫ টাকা। টিএসপি সার উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল রক ফসফেট বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ২৫ হাজার টন রক ফসফেট আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ২টি দরপত্র জমা পড়ে, যা রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স দেশ ট্রেডিং করপোরেশন (প্রধান সরবরাহকারী- মেসার্স জেনট্রেড এফজেডই, ইউএই) এই সার সরবরাহ করবে।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, আজকের সভায় টেবিলে তিনটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এরমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৭০ হাজার মেট্রিক টন সার কেনার দুইটি প্রস্তাব এবং সড়ক বিভাগের একটি প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগ সংক্রান্ত প্রস্তাব ছিল। এই তিনটি ক্রয় প্রস্তাবের সঙ্গে আর্থিক সংশ্লেষণের পরিমাণ ৪৯৫ কোটি ১৮ লাখ ৮১৫ টাকা।
নদী বন্দর / এমকে