কুড়িগ্রামে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের সর্ব উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত ঘেঁষা গ্রামের নাম শালঝোড়। কালজানী ও গদাধর নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চরের মতো ওই গ্রামটির কয়েক হাজার মানুষের যেন দুঃখের শেষ নেই। গ্রামটির তিন দিকেই ভারতীয় সীমানা। গ্রাম থেকে বের হওয়ার একটি মাত্র পথ। আর এ পথেই গদাধর নদের ওপর রয়েছে একটি সেতু। কিন্তু সেতু থাকলেও সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় সেখানে কাঠ ও বাঁশের সাঁকো জোড়া দিয়ে কোনো রকমে চলাচল করছে গ্রামবাসী।
এলাকাবাসী জানায়, ২০০০ সালে গদাধর নদের উপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করে। সেতুটি নির্মাণের পর ২০১৭ সালের বন্যায় পশ্চিম পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে বিলীন হয়ে যায়। আর তখন থেকেই ওই সেতুতে ভেঙে যাওয়া সংযোগ সড়কে কাঁঠ ও বাঁশের সমন্বয়ে সাঁকো করে জোড়াতালি দিয়ে চলছে সেতু পারাপার।
সেতুটি শালঝোড় গ্রামের বাসিন্দাদের একমাত্র চলাচলের পথ হওয়ায় গ্রামের শত শত শিক্ষার্থী ঝুঁকি নিয়ে উপজেলার উত্তর ধলডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়, ধলডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়, দিয়াডাঙ্গা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উত্তর তিলাই রুহুল আমিন দাখিল মাদরাসা, ভুরুঙ্গামারী ডিগ্রি কলেজসহ ভুরুঙ্গামারী মহিলা কলেজে যায়। শালঝোড় গ্রাম ছাড়াও ইউনিয়নের কাজিবাড়ী, হাজিবাড়ী, সরকারবাড়ী, কুটিবাড়ী, বিলের পাড়, ব্যাপারী পাড়া, মাস্টার বাড়ী, খাঁ পাড়া, বয়াতি পাড়া, মৌলভী পাড়া, সরিষা পাড়া সহ মজিবর মেম্বার পাড়ার হাজার হাজার মানুষ প্রয়োজনে চলাচল করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ময়েজ উদ্দিন (৪০) বলেন, এই সেতু পার হয়ে প্রায় ৪ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে কালজানী নদ নৌকায় পার হয়ে সেখান থেকে আরও প্রায় ২ কিলোমিটার পর শিলখুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়। সামান্য কাজের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ পৌঁছাতে এবং বাড়ি ফিরতে প্রায় সারাদিন লেগে যায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন, গদাধর নদের পূর্ব পাড়ে শিলখুড়ি ইউনিয়নের শালঝোড় ওয়ার্ড এবং উত্তর ধলডাঙ্গা ওয়ার্ডের একাংশ অবস্থিত। এখানে লোকসংখ্যা প্রায় ১০-১২ হাজার। এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। নির্মিত হচ্ছে একটি বিজিবি ক্যাম্পও। প্রতিদিন শত শত মানুষ এ সেতুর উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ভারি কোনো জিনিস পরিবহন করতে ভীষণ কষ্ট করতে হয়।
এ বিষয়ে শিলখুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন বলেন, আমি এখন নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত আছি। তবে আল্লাহ যদি আমাকে পুনরায় নির্বাচিত করেন আমি প্রথমেই ওই সেতু মেরামতের উদ্যোগ নেবো।
উপজেলা প্রকৌশলী এন্তাজুর রহমান বলেন, বন্যা ও নদী ভাঙনের কারণে সেতুটির সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে। স্থানীয়ভাবে বাঁশ দিয়ে সংযোগ সড়ক তৈরি করে চলাচল করা হচ্ছে। বিষয়টি সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নদী বন্দর / সিএফ