সিরাজগঞ্জে সূর্যমূখী ফুলের চাষ দিন দিন বাড়ছে। কারণ গত কয়েক বছরে সুর্যমূখী ফুল চাষে সাফল্য পেয়েছেন এ জেলার চাষিরা। এখন ফুলে ফুলে ভরে গেছে ফসলের মাঠ। ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার সদর, কামারখন্দ, বেলকুচি, চৌহালী, শাহজাদপুর, তাড়াশ, কাজীপুর, উল্লাপাড়া ও রায়গঞ্জ উপজেলায় ২৬৪ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। যেটার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৮০ হেক্টর। কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে কৃষককে বীজ বিতরণ করা হয়েছে। প্রতি গাছে একটি করে ফুল আসে। বীজ বপনের পর ফসল সংগ্রহ করতে প্রায় তিন মাস সময় লাগে।
হেক্টর প্রতি ১.৫ টন পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। সূর্যমুখীর তেল অন্যান্য রান্নার তেলের চেয়ে ভালো এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ উপকারী। সূর্যমুখী চাষ করে শুরু থেকেই সফলতার মুখ দেখছেন এ জেলার কৃষকরা। যদি কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে সূর্যমুখী চাষ করে দ্বিগুণ লাভ করতে পারবেন। ফলে একদিকে উপকৃত হবেন কৃষক অপর দিকে মিটবে সূর্যমুখী তেলের চাহিদা।
সদর উপজেলার বহুলী ইউপির ধীতপুর আলাল গ্রামের কৃষক আলী আকবর বলেন, আমি সারাবছর ধান, গম, ও সবজির চাষ করি। গত দুই বছর হলো সূর্যমুখী ফুলের চাষ করছি। এবারও ১ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ শুরু করেছি। আমার সূর্যমুখী ক্ষেত ফুলে ফুলে ভরে গেছে। জমিতে এক একটি ফুল যেন হাসিমুখে সূর্যের আলো ছড়াচ্ছে। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে গত বছরের চেয়ে এবারও লাভের আশা করছি।
সদর উপজেলার কাওয়াকোলা চরের ইউসুফ আলী বলেন, যমুনার চরাঞ্চলের অধিকাংশ জমি পতিত অবস্থায় পড়ে থাকে। আমার পতিত ৪ বিঘা জমিতে এবার সূর্যমূখী ফুল চাষ করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলনও পেয়েছেন ভালো। প্রতি বিঘা জমিতে ৪ হাজার টাকা খরচ করে বিঘা প্রতি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।
কাজীপুর উপজেলার ভানুডাঙ্গা গ্রামের ফুল চাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, আগে ধান, গম, ভুট্টা ও চাষ করতাম। খুব একটা লাভ হত না। গত ৫ বছর ধরে ফুল চাষ করছি। ধান গমের তুলনায় বেশি লাভ হয়। আগামীতেও ফুলের চাষ করব আশা করছি। সূর্যমুখী ফুলের খুব চাহিদা, ফলনও ভালো হয়।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু হানিফ জানান, জেলায় জমি সূর্যমুখী চাষের জন্য উপযোগী, এবছর সূর্যমুখী ফুলের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৮০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ২৬৪ হেক্টরে। এবার লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম হয়নি। বর্তমানে সূর্যমুখী ক্ষেতের যে অবস্থা তাতে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
নদী বন্দর / এমকে