1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
বাঁধ ভাঙার আশঙ্কায় ধরলা পাড়ের মানুষ - Nadibandar.com
শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৩ অপরাহ্ন
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১১ জুন, ২০২২
  • ৯৭ বার পঠিত

২০১৭ সালে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে ধরলার প্রবল ঢলে ভেসে যায় বাহাদুর মিয়ার ঘরবাড়ি।  এরপর অনেক কষ্টে বাঁধের ধারেই নতুন করে বাড়ি নির্মাণ করেন এই ক্ষুদ্র কৃষক। এরপর পানি উন্নয়ন বোর্ড কয়েকটি অংশসহ ৫২ কিলোমিটার বাঁধ মেরামত করে। কিন্তু এবারের ঘন ভারি বৃষ্টির কারণে আবারও তার বাড়ির পাশে বাঁধে ভাঙন ধরেছে।

আসন্ন বন্যায় ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ায় শঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সন্ন্যাসী গ্রামের বাসিন্দা বাহাদুর মিয়ার।

শুধু বাহাদুর মিয়া নন, সদর ও রাজারহাট উপজেলার ১০টি গ্রামের মানুষ বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। সদর উপজেলার মদাজাল ফাড়া গ্রাম থেকে রাজারহাটের জয়কুমর গ্রাম পর্যন্ত অন্তত ৩০টি স্থানে মেরামত করা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড একে ‘রেইন কাট’ বলে অভিহিত করলেও বাঁধে বড় বড় গর্তের কারণে যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

কৃষিপণ্য আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা। এ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদার পরস্পরবিরোধী কথা বলছেন। পানি উন্নয়নের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঠিকাদার এখনও কাজ শেষ না করায় চূড়ান্ত বিল দেওয়া হয়নি।  

অপরদিকে ঠিকাদার জানান, কাজ শেষ হবার পরেও বিল দেওয়া হচ্ছে না। বরং বছর বছর মেরামত করিয়ে নেয়ায় তারা লোকসানে পড়েছেন।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে চিলমারী থেকে লালমনিরহাটের বাসুরিয়া পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ মেরামত কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীরে ১৮ দশমিক ৭ ও ও ধরলা নদীর ডান তীরে ৩৪ কিলোমিটার বাঁধ মেরামতে মাটির কাজ ও টার্ফিং বা দু’ধারে ঘাস লাগানো কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ২৩ কোটি টাকা। মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের জুন মাসে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বাংটুরঘাট থেকে জয়কুমর পর্যন্ত অনেক স্থানে বাঁধের পার ধসে গেছে। কোথাও কোথাও বাঁধের ভেতর বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। পথচারি ও সাইকেলআরোহী ছাড়া অন্য যানবাহন চলাচল করতে পারছেনা। সদর উপজেলার সন্ন্যাসী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ মিয়া জানান, মেরামতের এক বছরের মাথায় বৃষ্টিতে বাঁধ ধবসে যাচ্ছে। তারা ভয়ে ভয়ে ধরলার পাড়ে পরিবার নিয়ে বাস করছেন। বন্যা হলে বড় বিপদ হতে পারে।  

বাঁধের ধারে বাস করা দিনমজুর মহাজন মিয়া বলেন, বান্দের ভিতরা ভাঙি দরিয়া হয়া আছে। গাড়িঘোড়া চলে না। বন্যা হইলে এই বান্দ ভাঙি যাইবে। ধরলার চরে ভুট্টা চাষ করেছেন ইদ্রিছ আলী। বাঁধে যানবাহন না চলায় এই ভুট্টা বাড়ির আঙিনায় আনতে অনেক খরচ হচ্ছে বলে জানান তিনি।

কৃষক মামুনুর রশিদ জানান, ২০১৭ সালে এই বাঁধের তিনটি স্থানে ভেঙে যায়। অনেকগুলো গ্রাম প্লাবিত হয়। বাঁধটি আবার ভেঙে গেলে সন্ন্যাসী গ্রামের উন্নত জমি সব বালুতে ঢেকে যাবে। ঘর বাড়ি সব ভেসে যাবে। এ নিয়ে চিন্তিত সন্ন্যাসী, জয়কুমর, মদাজাল ফাড়া, কামারপাড়া, কিং ছিনাই, কালুয়ারচর , মেকলিসহ ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।

দিনমজুর বাবুল মিয়া অভিযোগ করেন, অনেক দিন ধরে বাঁধের এই দুরাবস্থা হলেও ঠিকাদার বা পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন কর্মকর্তা জানান, বাঁধ মেরামতের কাজ শেষ না করেই ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে দেন। অনেক স্থানেই বাঁধের প্রস্থ নির্ধারিত ৬ মিটারের কম আছে, বাঁধের দুই পাড়ে ঘাসও লাগানো হয়নি। যদিও ঠিকাদার মোস্তাফিজুর রহমান সাজু দাবি করেছেন, বাঁধ মেরামতের কাজ শেষ হবার পরেও ঢাকা থেকে টাস্কফোর্স না আসায় মাটি চূড়ান্ত পরিমাপ করে বিল দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিবছর তাদেরকে বাঁধ মেরামত করে দিতে হচ্ছে। এতে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, মূলত বাঁধ মেরামতের কাজ এখনও সমাপ্ত হয়নি। যেহেতু চূড়ান্ত পরিমাপ করা হয়নি, তাই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের মাধ্যমে ভাঙা অংশগুলো মেরামত করে বন্যার আগেই বাঁধকে শক্তিশালী করার ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঠিকাদারকে এ ব্যাপারেও চিঠিও দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

নদী বন্দর/এসএফ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com