নেত্রকোণার ১০ উপজেলায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। তবে বন্যার পানিতে তলিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ সড়ক ভেঙে গেছে।
জানা গেছে, ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে নেত্রকোণার ১০ উপজেলায় বন্যা দেখা দেয়। এই বন্যায় ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৪১০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে পানি কমায় এরই মধ্যে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মানুষ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে। জেলার ৩৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে এখনও ১ লাখ ১২ হাজার মানুষ রয়েছে। বন্যার পানি বাড়িঘর থেকে না নামায় ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেক পরিবার এখনো বাড়িতে ফিরতে পারছে না।
জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, বারহাট্টা, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরি ও মদন উপজেলায়। পাঁচটি উপজেলায় এলাকায় এখনো পানিবন্দি আছে তিন লাখ মানুষ। এদিকে কলমাকান্দার আটটি ইউনিয়নে ৩৪৩টি গ্রামেই বন্যা কবলিত হয়। এতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় সীমান্তবর্তী লেংগুরা, খারনৈ, রংছাতি ও বড়খাপন ইউনিয়নে।
এ ছাড়া উপজেলার সবগুলো সড়ক পানিতে তলিয়ে যানচলাচল এখনো বন্ধ রয়েছে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে তাদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। এখনও প্রায় ছয় হাজার মানুষ কলমাকান্দার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। অনেকের বাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তারা আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যেতে পারছেন না।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাসেম জানান, বন্যার পানি কমছে। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে নিজ নিজ বসতবাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন। তবে এখনো ছয় হাজারের মতো মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে। বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে।
নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিস জানান, বন্যার্তদের জন্য এ পর্যন্ত ৫৯৩ টন জিআর চাল, নগদ ৩৩ লাখ টাকা ও ৬ হাজার ৮৫০ প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ করা হয়। এরই মধ্যে ৫১২ টন চাল, ২৭ লাখ টাকা ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পানি নেমে যাওয়ায় অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে।
নদী বন্দর/এসএফ