ফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত দুজন নিহত এবং কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। বুধবার (২৭ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৪৩ মিনিটে দেশটির উত্তরাঞ্চলে আঘাত হানে এ ভূকম্পন। এতে কয়েক জায়গায় ছোট ভূমিধসসহ বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর এপির।
ফিলিপাইন ইনস্টিটিউট অব ভলকানোলজি অ্যান্ড সিসমোলজি জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল আবরা প্রদেশের পার্বত্য এলাকায় এবং কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ২৫ কিলোমিটার গভীরে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি লাগানগিলাং শহরের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মাইকেল ব্রিলান্টেস বলেন, মাটি এমনভাবে কাঁপছিল, মনে হচ্ছিল যেন আমি কোনো দোলনায় রয়েছি এবং হঠাৎ আলো নিভে গেলো। আমরা দৌড়ে অফিস থেকে বেরিয়ে আসি। আমি চিৎকার শুনতে পাচ্ছিলাম এবং আমার কিছু সঙ্গী কান্নায় ভেঙে পড়েছিল।
তার কথায়, আমার দেখা এটি সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ভেবেছিলাম, মাটি ফেটে দু’ভাগ হয়ে যাবে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আবরা প্রদেশে বাড়ির ধসে পড়া স্লাবের নিচে চাপা পড়ে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন। আহতদের বেশিরভাগকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এছাড়া, পার্শ্ববর্তী প্রদেশ বেঙ্গুয়েটের লা ত্রিনিদাদ শহরে ধ্বংসাবশেষের আঘাতে মারা গেছেন এক নির্মাণ শ্রমিক। সেখানে ভূমিধসের পর বেশ কয়েকটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ভূমিকম্পের সময় গাড়ির ওপর পাহাড়ের পাথর ধসে আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন।
আবরা প্রদেশে অনেক ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। বেশ কয়েটি বাড়ি ধসে পড়েছে। ফিলিপিনো প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিন ফিলিপাইন ইনস্টিটিউট অব ভলকানোলজি অ্যান্ড সিসমোলজি শুরুতে ভূমিকম্পের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৩ জানিয়েছিল। তবে পরে তা সংশোধন করে মাত্রা সাত বলে জানানো হয়েছে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থাও (ইউএসজিএস) বলেছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল সাত এবং কেন্দ্রের গভীরতা ১০ ছিল কিলোমিটার। ফিলিপাইনের পাশাপাশি এর প্রভাব অনূভূত হয়েছে জাপান, তাইওয়ান এবং চীনেও।
ফিলিপাইনে ভূমিকম্পটি আঘাত হানার পরে বেশ কয়েকটি আফটারশক অনূভূত হয়েছে। সেখানে আরও আফটারশক এবং ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করেছে ফিলিপিনো কর্তৃপক্ষ। তবে কোনো সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়নি।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় রিং অব ফায়ারে অবস্থানের কারণে ফিলিপাইনে প্রায়ই শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ১৯৯০ সালে দেশটির উত্তরাঞ্চলে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার এক ভূমিকম্পে প্রায় দুই হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।
নদী বন্দর/এবি