শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার নদীগুলো শাসন ব্যবস্থার অভাবে বর্ষা মৌসুমে প্রতিবছর কোটি টাকা মূল্যের ফসলের ক্ষতি হচ্ছে।
নদী বেষ্টিত এ উপজেলায় ছোট বড়ো ৪টি নদী রয়েছে। নদীগুলো হচ্ছে- মহারশি,সোমেশ্বরী, কালঘোষা ও মালিঝি নদী। নদীগুলোর দৈর্ঘ প্রায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার। এসব নদীর উৎসস্থল ভারতে। পাহাড়ি এসব নদীগুলো ঝিনাইগাতী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, নদীগুলো ভরাট হবার পাশাপাশি নদীর দু’পাশে জেগে উঠা চর দখল করে অবৈধভাবে ঘরবাড়ি গড়ে উঠায় নদীগুলো সংকুচিত হয়ে পরেছে। এ কারণে পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্রতিবছর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ উপজেলায় আবাদি জমির পরিমাণ প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর। আর কৃষক রয়েছে ৪০ হাজার।
শুষ্ক মৌসুমে নদীগুলোর পানি সেচ কাজে ব্যবহার করে বোরো মৌসুমে আবাদ করে থাকে কৃষকরা। তবে বর্ষাকালে আমন মৌসুমে নদীগুলোতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির কৃষকদের দুঃখ দুর্দশার সীমা থাকে না। পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে নদীর বিভিন্ন স্থানে নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে আবার কখনো কখনো নদীর দুকূল ছাপিয়ে পানি প্রবেশ করে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি ঢলের পানিতে পুকুর তলিয়ে শতশত পুকুরের মাছ ভেসে যায়। শতশত বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায়।
ধানশাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামসহ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নদী শাসনের অভাবে প্রতিবছর ১০ হাজার কৃষকের কোটি টাকার উপরে ফসলের ক্ষতি হয়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হুমায়ুন দিলদার বলেন, নদীগুলো খনন করে দু পাশে শক্তিশালী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হলে কৃষকদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের জামালপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাইদ বলেন, মহারশী নদী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার পাশাপাশি নদী খননের ব্যাপারে প্রকল্প প্রণয়ন করে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া গেলে কার্যক্রম শুরু করা হবে। বাদ বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে পাঠানো হবে।
নদী বন্দর/এসএইচ