টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ঠিক যেমন হওয়া প্রয়োজন ঠিক তেমনই এক ম্যাচ উপহার দিয়েছে বিপিএলের দুই টেবিল টপার ফরচুন বরিশাল এবং সিলেট স্ট্রাইকার্স। যেখানে রান হয়েছে, উইকেট পড়েছে এমনকি জয় নির্ধারণ হয়েছে শেষ বলে। মিরপুর শের ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচে সাকিবের বরিশালকে মাত্র ২ রানে হারিয়েছে মাশরাফীর সিলেট।
এদিন টসে হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে শান্তর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের কল্যাণে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রান তোলে সিলেট। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান তুলতে পারে বরিশাল।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই বিপদের হাত থেকে বেঁচে যায় বরিশালের ব্যাটসম্যান ইব্রাহিম জাদরান। মাশরাফীর আচমকা অসমান বাউন্স বুঝতে না পেরে পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দেন জাদরান। কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে সহজতর ক্যাচটি মিস করেন জাকির হাসান।
সিলেটের ফিল্ডারের এমন ভুলের পর আক্রমণাত্মক হয়ে পড়েন সাইফ হাসান। মাশরাফী থেকে শুরু করে মোহাম্মদ আমিরকেও ছয় হাঁকান সাইফ। দারুণ খেলতে থাকা সাইফকে ফেরান বিপিএলে অভিষেক হওয়া তানজিম সাকিব।
প্রথমবার বল হাতে নিয়েই সাইফকে আউট করার দারুণ সুযোগ তৈরি করেন সাকিব। কিন্তু থার্ড ম্যান অঞ্চলে তার ক্যাচ মিস করেন তৌহিদ হৃদয়। তবে একই ওভারে দুই বাউন্ডারি হজম করে এরপর সাইফকে মুশফিকের ক্যাচে পরিণত করে ফেরান সাকিব। আউট হওয়ার আগে ১৯ বলে ৪টি ছয়ে ৩১ রান করেন সাইফ। তিনে নেমে আনামুল বিজয় ৮ বলে মাত্র ৩ রান করে ফেরেন।
এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে ইব্রাহিম জাদরানের সঙ্গে ৬১ রান যোগ করেন বরিশাল অধিনায়ক সাকিব। ১ রানের ব্যবধানে দুই ব্যাটসম্যানই অবশ্য আউট হয়ে যান রেজাউর রাজার এক ওভারে। আউট হওয়ার আগে ইব্রাহিম করেন ৩৭ বলে ৪টি চার ও ২টি ছয়ে ৪২ রান। অন্যদিকে সাকিব খেলেন ১৮ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে ২৯ রান।
১০৮ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারানো বরিশাল অবশ্য রান তাড়ায় আক্রমণাত্মক ক্রিকেটই খেলতে থাকে। বরিশালের পক্ষে করিম জানাত মাত্র ১২ বলে ৩ ছয়ে ২১ রান করেন। জানাত আউট হয়ে যাওয়ার পর মাঠে নেমেই নিজের মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে ছয় হাঁকান মাহমুদউল্লাহ।
অবশ্য ৭ রান করে ফেরেন তিনিও। তখন শেষ ২ ওভারে বরিশালের প্রয়োজন ছিল ২৩ রান। উনিশতম ওভারে আমির বোলিংয়ে আসলে মাত্র ৮ রান দেন তিনি। শেষ ওভারে ১৫ রান আটকানোর দায়িত্ব পড়ে রেজাউর রাজার হাতে। এই পেসার অধিনায়কের নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠেন। তিনি রান দেন মাত্র ১২। তুলে নেন ২ উইকেট। ফলে ২ রানে জয় পায় সিলেট।
এর আগে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে নাজমুল হোসেন শান্তর অপরাজিত ৮৯ রানের কল্যাণে বড় সংগ্রহ পায় সিলেট। ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম দুই ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে সিলেট। মোহাম্মদ ওয়াশিম এক ওভারেই নেন ৩ উইকেট।
মাত্র ১৫ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেট জুটিতে টম মুরসের সঙ্গে ৮১ রান যোগ করেন শান্ত। মুরস ৩০ বলে ৪০ রান করে ফেরেন। এরপর থিসারা পেরেরার সঙ্গে আরও ৬৮ রান যোগ করেন শান্ত। যেখানে মাত্র ২১ রান ছিল পেরেরার।
অন্যপ্রান্তে ৬৬ বলে ১১টি চার ও ১টি ছয়ে শান্ত ৮৯ রানে অপরাজিত থেকে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেন। বরিশালের পক্ষে ওয়াশিম ৩৪ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নেন। এছাড়াও সাকিব ও কামরুল ইসলাম রাব্বি নেন ১টি করে উইকেট।
নদী বন্দর/এএন