ব্রেক্সিট-পরবর্তী বিভিন্ন বাণিজ্যিক নিয়মনীতির কারণে বিপাকে পড়েছে অনেক ব্রিটিশ কোম্পানি। ব্রিটেন আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে আমদানি-রফতানি অনেক কমে গেছে। ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক কোম্পানি।
২০২০ সালের শেষদিকে ২৭ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যায় ব্রিটেন। চলতি মাসের শুরু থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত যে কোনো দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্রিটেনকে শুল্ক দিতে হচ্ছে। অথচ যখন জোটভুক্ত ছিল তখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সিঙ্গেল একক বাজারে সব ধরনের সুবিধাই পেত ব্রিটেন।
ব্রেক্সিট চুক্তির পর ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যায়। সঙ্গে ছিন্ন হয় জোটভুক্ত সব ধরনের বাণিজ্যিক সুবিধার সম্পর্ক। এখন পণ্য আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হচ্ছে। সীমান্তে অনুমতি লাগছে পণ্যবাহী যান ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে কোনো দেশে প্রবেশে। মান যাচাই করা হচ্ছে সব খাদ্যপণ্যের। নিতে হচ্ছে রফতানি সনদ।
ব্রিটিশ স্ন্যাক্স কোম্পানি নিমস ফ্রুট ক্রিস্পস জানায়, তারা শুধু ব্রিটিশ ফল আর সবজি ব্যবহার করেন। রফতানি বন্ধ করে দিতে হবে কারণ সীমান্তে খাদ্যপণ্যের মান পরীক্ষা করার জন্য যে অতিরিক্ত অর্থ দিতে হবে, সে খরচ তারা বহন করতে পারবে না।
এক ব্যবসায়ী জানান, জানুয়ারি থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ইউরোপীয় ইউনিয়নে কিছু রফতানি করব না আর তাদের থেকে কিছু আমদানিও করব না। অন্য ৫টি দেশ বেছে নিয়েছি পণ্য আমদানি রফতানির জন্য। কিন্তু গত বছর থেকেই রফতানি অনেক কমে গেছে। প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
আইসক্রিম কোম্পানি লিটল মুনের স্বত্বাধিকারী হওয়ার্ড ওং ব্রিটিশ গণমাধ্যমকে জানান, আইসক্রিম বানাতে যে দুধ ব্যবহার করা হয়, সেটির মান পরীক্ষা করতে প্রতিবছর এখন থেকে ৬৯ হাজার ডলার অতিরিক্ত খরচ হবে।
এ ব্যবসায়ী আরো জানান, দুগ্ধজাত পণ্য রফতানি করি। এজন্য এখন প্রতিটা অর্ডারের জন্যই আলাদা করে সনদ নিতে হবে। যেখানে ২০০ পাউন্ড করে খরচ পড়বে। আবার ভেটেরিনারি ডাক্তারের কাছ থেকে সনদ নিতে হবে যে দুধের মান ঠিক আছে কিনা। তাহলে বছরে অনেক খরচ পড়বে আমাদের।
ব্রিটিশ বৃহত্তম সুপার মার্কেট চেইন জানায়, উত্তর আয়ারল্যান্ডে খাদ্যপণ্য রফতানিতেও বাধা আসছে। শুধু খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নয়, সীমান্তে নতুন নিয়মনীতির কারণে ভোগান্তিতে পড়ছে ওয়্যারহাউসগুলো। ব্রিটিশ এক ওয়্যারহাউস কর্তৃপক্ষ বলছে, লরি ড্রাইভারদের সীমান্তে অতিরিক্ত অর্থ দিতে হচ্ছে ব্রিটেনে ঢোকা এবং ব্রিটেন থেকে বের হওয়ার সময়। লোকসানে পড়ছে ওয়্যার হাউসগুলো।
নদী বন্দর / জিকে