মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি, নানা ধরনের মামলা-মোকদ্দমা এবং দল পরিচালনায় অযোগ্যতা ও অসাংগঠনিক আচরণের কারণে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদপন্থিরা। একই সঙ্গে রওশন এরশাদকে জাতীয় পার্টির নতুন চেয়ারম্যান করার কথা জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) রওশন এরশাদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, জাতীয় পার্টির একাংশের মেয়াদোত্তীর্ণ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। দশম জাতীয় কাউন্সিলকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিলেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ।
জাতীয় পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ কো-চেয়ারম্যানদের পূর্বে নেওয়া সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেন বেগম রওশন এরশাদ। সে অনুযায়ী আসন্ন দশম জাতীয় সম্মেলন পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
এর আগে জাতীয় পার্টির অধিকাংশ প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্যের মতামত এবং চারজন কো-চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে পার্টির চলমান ক্রান্তিকাল মোকাবিলায় দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদকে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
গত বছরের ৭ ডিসেম্বরের এক সভার কার্যবিবরণীতে দেখা যায়, মামলা-মোকদ্দমায় জাতীয় পার্টির চলমান অচল অবস্থা নিরসনে পার্টির চারজন কো-চেয়ারম্যান ও দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্য দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদকে সংকট উত্তরণে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। এতে তাদের স্বাক্ষর রয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পার্টির চার কো-চেয়ারম্যান ও দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রধান পৃষ্ঠপোষককে ক্রান্তিকাল মোকাবিলায় অস্থায়ী ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব অর্পণ করেন। উল্লেখিত কো-চেয়ারম্যানরা হলেন- এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম। আর প্রেসিডিয়াম সদস্যরা হলেন- আলহাজ শফিকুল ইসলাম সেন্টু ও ডা. নাছরিন জাহান রত্নী। যা আজ মঙ্গলবার রওশন এরশাদ গ্রহণ করেছেন।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘আমি কখনো রওশন এরশাদকে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করিনি। এক বছর, দুই বছর আগের কোনো স্বাক্ষরকে কেন্দ্র করে এ ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানোর সুযোগ নেই।’
তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন জিএম কাদেরপন্থি একাধিক নেতা। জিএম কাদেরের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী বিষয়টি সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, মিটিং কোথায় হয়েছে? কারা উপস্থিত ছিলেন? এটা রওশনপন্থিরা বলতে পারবেন। এ বিষয়ে রওশনপন্থি নেতা ইকবাল হোসেন রাজুও কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।
নদী বন্দর/এসএকে