ভৈরবে রোপা আমন ধানের জমি তৈরি ও চারা রোপণের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। বৃষ্টি না হওয়ায় বিকল্প উপায়ে জমিতে পানি দিয়ে রোপণের উপযোগী করছেন উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের কৃষকরা।
আমন চাষকে ঘিরে যেন এখন মাঠে মাঠে উৎসব শুরু হয়েছে। তবে তীব্র দাবদাহে আর বৃষ্টির অভাবে আমন ধানের চারা রোপণের ভরা মৌসুম হলেও বিপাকে পড়েছিলেন কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সাদেকপুর, রসুলপুর, মেন্দিপুর, গজারিয়া, মানিকদি, তেয়ারিচর, ভবানীপুর, শ্রীনগর, কালিকাপ্রসাদ এলাকার কৃষকরা তাদের জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ নিয়ে সকাল-সন্ধ্যা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কেউ জমির আইল কোদাল দিয়ে কোপাচ্ছেন। কোথাও কোথাও মাঠ সমান করার জন্য শ্যালো ইঞ্জিনচালিত পাওয়ার টিলার দিয়ে চলছে মইয়ের কাজ। কোথাও আবার কৃষকরা নিজেই মই টেনে জমি সমান করছেন। আবার কোথাও আমন ধান রোপণের জন্য বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে ধানের চারা। কেউ আবার জমিতে জৈব সার দিচ্ছেন।
উপজেলার রসুলপুর গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতিবছরই এই সময়ে জমিতে বাড়তি ফসল হিসেবে রোপা আমন ধান চাষ করে থাকি। এই বছরেও ৮ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান রোপণ করেছি। বৃষ্টি কম হওয়ায় সেচ দিয়ে জমিতে ধান রোপণের জন্য উপযোগী করতে হয়েছে।
উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের কৃষক রাহিম ভূঁইয়া বলেন, এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করেছি। আমাদের এলাকার জমিগুলোতে বছরে দুই ধরনের ফসল আবাদ হয়ে থাকে। আমরা বর্ষার শেষে পানি চলে যাওয়ার পর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করি। পরবর্তীতে একই জমিতে বোরো ধান চাষ করা হবে। এটিই আমাদের মূল ধান চাষ। যদি আবহাওয়া রোপা আমন ধান চাষের অনুকূলে থাকে আর বর্ষার পানিতে যদি ধান তলিয়ে না যায় তাহলে ফলন ভালো হবে।
ভবানীপুর গ্রামের কৃষক রহমতুল্লাহ মিয়া বলেন, আমাদের এলাকায় সাধারণ বোরো ধান বেশি আবাদ করা হয়। তবে বর্ষার শেষ দিকে যদি বর্ষার পানি দ্রুত সময়ের মধ্য চলে যায় তাহলে পানিতে ডুবে যাওয়া জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করি। আসলে এই ফসলটা আমাদের জন্য বাড়তি একটি ফসল হিসেবে পেয়ে থাকি।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, রোপা আমন ধান চাষের জন্য ৫৫০ জন কৃষকে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। ভৈরবে এবার রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা রয়েছে ২ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমি। এ পর্যন্ত ধান চাষে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ৩৭০ হেক্টর।
তিনি আরও বলেন, আমরা রোপা আমন ধান চাষে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মীরা সার্বক্ষণিক কৃষকদের খোঁজ খবর রাখছেন এবং কৃষি বিষয়ক পরামর্শ দিচ্ছেন।
নদী বন্দর/এসএইচবি