বাংলাদেশ ৩৫ ওভারও খেলতে পারলো না! ১৬৮ থেকে ১৭১, মাত্র ৩ রানের ব্যবধানে বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয়। ৩৫ ওভারও খেলতে পারেনি শান্তর দল। অবশ্য অধিনায়ক চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সঙ্গী হিসেবে কাউকে পাননি। সর্বোচ্চ ৭৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান করেন মাহমুদুল্লাহ। আর কেউ বিশের ঘর পার হতে পারেননি। কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন মিলনে। এ ছাড়া ২টি করে উইকেট নেন বোল্ট-ম্যাককনকি।
টানা তিন ওভারে নেই তিন উইকেট
শান্তর আউটের পর টানা তিন ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে অলআউট হয় বালাদেশ। রাচিন রবীন্দ্রর ঘূর্ণিতে পরাস্ত হন হাসান (১)। পরের ওভারে আশা দেখানো নাসুম ফেরেন ম্যানকনকির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। তার ব্যাট থেকে আসে ১৯ বলে ৭ রান। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হন শরিফুল। ১ রানে তাকে ফেরান মিলনে। এটি তার চতুর্থ উইকেট।
দারুণ খেলতে থাকা শান্ত ফিরলেন ৭৬ রানে
বোলিংয়ে এসেই দ্বিতীয় বলে সবচেয়ে বড় উইকেট তুলে নিলেন নিকোলস। বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র লড়াই চালিয়ে যাওয়া শান্তকে তিনি ফেরান ৭৬ রানে। নিকোলসের লেন্থ বল আউটসাইড অফে স্কিড করে, শান্ত রিভার্স সুইপ করতে চেয়েছিলেন। ব্যাটে-বলে এক হয়নি। বল লাগে পায়ে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। ১০টি চারে ৮৪ বলে এই রান করেন শান্ত।
শান্তকে রেখে ফিরলেন মাহেদীও
বোল্টের গতিতে পরাস্ত মাহেদী। কাট করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ব্যাটে বলে সংযোগ ঠিকমতো হয়নি। ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় উইকেটের পেছনে। ১৪ বলে ১৩ রান করেন এই অলরাউন্ডার। এক পাশে শান্ত দাঁড়িয়ে আছেন আরেক পাশে নিয়মিত বিরতিতে পড়ছে উইকেট। ক্রিজে এবার শান্তর সঙ্গী নাসুম।
২৭ বলে ২১ রানে ফিরলেন মাহমুদউল্লাহ
মিলনের অফ সাইডের বল। ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু হলো না। ব্যাটের কোণায় লেগে বল চলে যায় উইকেটের পেছনে। ২৭ বলে ২১ রান করে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। তার আউটে ভাঙে শান্তর সঙ্গে গড়া ৪৯ রানের জুটি। বাংলাদেশ ১৩৭ রানে হারায় পঞ্চম উইকেট। ক্রিজে শান্তর সঙ্গী শেখ মাহেদী।
ইনজুরি থেকে ফিরেই শান্তর হাফ সেঞ্চুরি
ইনজুরি থেকে ফিরেই শান্তর ফিফটি! ম্যানকনকির বলে ডিপ কাভারে ঠেলে ৫৫ বলে শান্ত দেখা পান ৫ম ফিফটির। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ৭টি চারের মারে। এশিয়া কাপের গ্রুপপর্বে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরির পর ছিটকে গিয়েছিলেন। দলে ফিরেছেন অধিনায়ক হয়ে। প্রত্যাবর্তনে পেলেন ফিফটি। তার ফিফটির আগে বাংলাদেশ দলীয় শতক পূর্ণ করে।
দুর্ভাগা মুশফিক ফিরলেন ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বোল্ড হয়ে
ফার্গুসনের ১৪২ কিলোমিটার গতির বল রুখে দিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু ঠিকঠাক হয়নি। বল ডিফেন্স করার পর যাচ্ছিলো উইকেটের দিকে। মুশফিক পা দিয়ে সরাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু স্পর্শ করতে পারেননি। বল আঘাত করে উইকেটে। এরপর মুশফিকের পাও লাগে উইকেটে। দুই ছক্কায় সম্ভাবনা দেখানো মুশফিক বোল্ড। তার আউটে ভাঙে শান্তর সঙ্গে গড়া ফিফটির জুটির। দুজনের জুটি থেকে ৫৯ বলে ৫৩ রান আসে। ক্রিজে শান্তর সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ।
বিপদের মুহূর্তে আগ্রাসী মনোভাবে ফিরলেন হৃদয়
মিলনের আউটসাইড অফের বল। কাভারে থাকা ফিল্ডারের মাথার উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ব্যাটে-বলে ঠিক মতো হলো না। বল চলে যায় পয়েন্টে দাঁড়ানো ইয়ংয়ের হাতে। ৩ চারে ১৭ বলে ১৮ রান করেন হৃদয়। অথচ আগের বলেই ফাইন লেগে হাঁকিয়েছিলেন দারুণ চার। এ সময়ে প্রয়োজন ছিল হৃদয়ের ক্রিজে থিতু হয়ে প্রতিরোধ গড়া। বিপদের মুহুর্তে উলটো হৃদয় বিপদ বাড়ালেন। ৩৫ রানে রানে তৃতীয় উইকেট হারালো বাংলাদেশ। ক্রিজে শান্তর সঙ্গী মুশফিকুর রহিম।
অভিষেকে রাঙাতে পারলেন না জাকির, ফিরলেন তানজীদও
টেস্ট অভিষেকে ভারতের বিপক্ষে পেয়েছিলেন সেঞ্চুরি। কিন্তু ওয়ানডেতে তার বিপরীত চিত্রটাই ঘটলো জাকির হাসানের সঙ্গে। মাত্র ১ রানে ফিরলেন বোল্ড হয়ে। মিলনের অফের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে ফিরলেন ইনসাইড এজ হয়ে। বাংলাদেশ ৬ রানে হারালো প্রথম উইকেট। পরের ওভারেই সাজঘরে ফেরেন তানজীদ হাসান তামিম। বোল্টের চতুর্থ স্ট্যাম্পে করা বল খোঁচা দেন তানজীদ। স্লিপে ধরা পড়েন অ্যালেনের হাতে। ৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারালো বাংলাদেশ। ক্রিজে শান্তর সঙ্গী হৃদয়।
১৮ মিনিট বিলম্বে খেলা শুরু
খেলা শুরুর মিনিট পাঁচেক বাকি। ক্রিকেটাররা প্রস্তুত হচ্ছিলেন মাঠে নামার জন্য। তখনি শের-ই-বাংলায় নামে বৃষ্টি। দ্রুত পিচ ঢেকে রাখা হয় কাভারে। শুরুতে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হলেও ধীরে ধীরে তীব্রতা বাড়তে থাকে। তাও বেশি স্থায়ী হয়নি। ১০ মিনিটের মাথায় বন্ধ হয়ে যায় বৃষ্টি। ২টা ১০ মিনিটে কাভার সরিয়ে নেওয়া হয়। এখন চলছে মাঠ প্রস্তুতির কাজ। ১৮ মিনিট দেরিতে শুরু হয় খেলা।
ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি বাংলাদেশ-নিউ জিল্যান্ড। টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দুপুর ২টায় খেলাটি শুরু হবে।
১৪৭তম ওয়ানডে ক্রিকেটার জাকির হাসান
১৪৭তম ওয়ানডে ক্রিকেটার হিসেবে লাল সবুজের জার্সি গায়ে দেবেন জাকির। ২০১৮ সালে টি-টোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় এই ব্যাটারের। তবে এরপর ৪ বছরের বেশি সময় ছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে। অবশেষে ২০২২ সালের ডিসেম্বর ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন তিনি। অভিষেক ম্যাচেই হাঁকিয়েছেন শতক। ৩ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ১ সেঞ্চুরি ও ২ ফিফটিতে তার সংগ্রহ ২৫৮ রান। এবার ওয়ানডেতে রাঙানোর পালা।
বাংলাদেশ নেমেছে একাদশে চার পরিবর্তন নিয়ে। অভিষেক হচ্ছে জাকির হাসানের। দলে এসেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, শরিফুল ইসলাম ও জাকির হাসান।
একাদশে যারা বাংলাদেশ একাদশ- নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তানজীদ হাসান তামিম, তাওহীদ হৃদয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকির হাসান, মুশফিকুর রহিম, শেখ মেহেদী, নাসুম আহমেদ, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম।
নিউজিল্যান্ড একাদশ
ফিন অ্যালেন, উইল ইয়ং, ডিন ফক্সক্রফট, হেনরি নিকোলস, টম ব্লান্ডেল, রাচিন রবীন্দ্র, কোল ম্যাককনকি, ইশ সোধি, অ্যাডাম মিলনে, লকি ফার্গুসন (অধিনায়ক) ও ট্রেন্ট বোল্ট।
ষোলোতম অধিনায়ক শান্ত
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে শান্তর নেতৃত্বে খেলবে বাংলাদেশ। ১৬তম অধিনায়ক হিসেবে শান্ত বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে শান্ত জানিয়েছেন নেতৃত্ব দেওয়া গর্বের বিষয়, তিনি উপভোগ করবেন, ‘আমার মনে হয় একজন ক্রিকেটার হিসেবে আমার জন্য অনেক গর্বের ব্যাপার। সাথে সাথে আমার পরিবারের সদস্যদের জন্য অনেক গর্বের ব্যাপার। ক্রিকেট বোর্ড এই সুযোগটা তৈরি করে দিয়েছেন খুবই রোমাঞ্চিত এবং উপভোগ করবো।’
নতুন শুরু চান শান্ত
বিশ্বকাপ যাত্রার আগের বাংলাদেশের শেষ লড়াইয়ের সঙ্গে শান্তর নতুন শুরু। দুটো উপলক্ষ ভালোভাবে শেষ করতে চান বাংলাদেশের ষোলোতম অধিনায়ক, ‘চ্যালেঞ্জ না আমার কাছে মনে হয় আনন্দের। খুব ভালো লাগতেছে এমন সুযোগ এবং এমন অবস্থায় আমাদের টিম আছে, সামনে বিশ্ব কাপ। সব মিলায়া আমার কাছে মনে হয় যদি আমরা এই জায়গায়, ব্যক্তিগতভাবে আমি যদি ভালোভাবে শেষ করতে পারি ম্যাচটা আমার ভবিষ্যতের জন্য ভালো হবে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের টিম একটা ভালো অবস্থায় থাকবে। মেইন যে জিনিসটা হলো যে, কিভাবে কালকের ম্যাচটা আমরা খুব ভালোভাবে শেষ করতে পারি।’
১৫ বছর পর সিরিজ হারের মুখে বাংলাদেশ
অধিনায়কত্বর যাত্রার দিনই শান্তর সামনে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ বাঁচানোর চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হেরে ইতিমধ্যে সিরিজে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। আজ জিতলে সিরিজ হবে টাই, হারলে ট্রফি কিউইদের। ২০০৮ সালের পর এই প্রথম ঘরের মাঠে কিউইদের কাছে সিরিজ হারের মুখে বাংলাদেশ।
নদী বন্দর/এসএইচবি