কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী (এলজিআরডি) মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, আসন্ন ৭ জানুয়ারি নির্বাচন যথাসময়ে সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের নেতৃত্বেই অনুষ্ঠিত হবে। কোনো অপশক্তি এতে বাধা দিত দিতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) মনোহরগঞ্জের খিলা ইউনিয়নে উঠান বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বেঁচে থাকলে ২০০০ সালেই বাংলাদেশ একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্বে জায়গা করে নিত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১৯৭৫ সালে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করছেন তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই দেশ ও দশের উন্নয়নে যে সকল কার্যক্রম গ্রহণ করেছিল পরবর্তীতে ২০০১ সালে ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব বন্ধ করে দিয়েছিল। দেশের সাধারণ মানুষের জন্য যে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়েছিল বিএনপি এসে সেগুলোও বন্ধ করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করে বিগত বছরগুলোতে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষমতায় এসে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে যাইনি। আমি এই এলাকার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর কোনো বিএনপি, জামায়াতের নেতাকর্মীকে হয়রানি করা হয়নি। অথচ বিএনপি ক্ষমতায় এসে এলাকার আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের হামলা, মামলা দিয়ে অতিষ্ঠ করে রেখেছিল।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কথা বলা হলেও মানুষের ক্রয়ক্ষমতার কথা আড়াল করা হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, বিশ্ব বাজারের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়লেও বাংলাদেশের মানুষ না খেয়ে থাকে না। তাদের ভাত কাপড়ের অভাব হয় না। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে।
৭ জানুয়ারির নির্বাচনের সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, যে দেশে সময়মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সেখানে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয় না। আর অনির্বাচিত সামরিক সরকার এলে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। সেজন্য ৭ জানুয়ারি সবাই সকাল থেকে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন। বাকি প্রার্থী যারা রয়েছে তাদেরকেও কোনোরকম বাধা দেওয়া বা জোর-জবরদস্তি করা যাবে না।
এছাড়াও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুনরায় সরকার গঠন করে দেশের উন্নয়নকে অব্যাহত রাখতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
‘বিএনপি নির্বাচনে না এলেও ভোট উৎসবে আমেজের কমতি হবে না’
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করলেও ভোট উৎসবে আমেজ কিংবা মানুষের উচ্ছ্বাসের কমতি হবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তাজুল ইসলাম। এদিন দুপুরে তার নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ পরিচালনার সময় নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, মানুষ অপেক্ষা করছে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার। আমি পথসভা ও উঠান বৈঠকে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি দেখেছি। তারা সবাই বলেছে ভোটকেন্দ্রে যাবে। মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে।
মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পরিচালিত হওয়ার কারণে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে মানুষ এখন এমনটি বিশ্বাস করছে। তারা অনুধাবন করেছে, যে যাই বলুক না কেন নেত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প কোনো কিছু নেই। মানুষ মনে প্রাণে বিশ্বাস করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের কাছে উন্নয়নের পথিকৃৎ। আমার এলাকার মানুষ আমাকে ভালবাসে এবং আমার সঙ্গে তাদের নিবিড় সম্পর্ক আছে। আমাকে ভোট দেয়ার জন্য অবশ্যই তারা ভোটকেন্দ্রে যাবে।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নিয়ে তিনি বলেন, আমি আসলে কাউকে হেভি ওয়েট মনে করি না। সবাইকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করি। এখানে বিএনপি’র প্রার্থী হলেও তাকেও আমরা কখনোই হেভিওয়েট প্রার্থী মনে করতাম না। তবে বিএনপি নির্বাচনে এলে প্রতিযোগিতার রাস্তা আরো বেশি সম্প্রসারিত হতো। মানুষ নির্বাচনের প্রতি আরো বেশি আগ্রহী থাকতো। অতএব আমি মনে করিনা বিএনপি নির্বাচন না করলে আমাদের এখানে নির্বাচনী আমেজ কম থাকবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, আমি প্রত্যাশা করি আমার এলাকায় কমপক্ষে পঞ্চাশ শতাংশ ভোট কাস্ট হবে। আমি কাউকে দুর্বল মনে করি না আবার কাউকে হেভিওয়েটও মনে করি না। সবাইকে আমি প্রতিদ্বন্দ্বি মনে করি। কারো প্রচার-প্রচারণা বেশি থাকবে, লোকজন বেশি থাকবে আবার কারো কম থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
এ সময় উঠান বৈঠকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, তাজুল ইসলাম এ আসনে টানা চারবারসহ মোট পাঁচবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ