ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাইয়ের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (১৬ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস এ তথ্য জানিয়েছেন।
শনিবার সকালে থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাড হাসপাতালে মারা যান স্বাধীন বাংলায় ঝিনাইদহে প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই। তিনি ঝিনাইদহ-১ আসনে পর পর ৫ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৮ বছর।
৭ জানুয়ারি ভোটের পর লিভার সিরোসিস ও ফুসফুসে নিউমোনিয়া নিয়ে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এরপর গত ১৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাড হাসপাতালে ভর্তি করেন তার স্বজনরা। বেশ কিছুদিন লাইফসাপোর্টে থাকার পর বাংলাদেশ সময় শনিবার সকাল ৬টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। এরপর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শৈলকুপা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাকিম আহমেদ এবং ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. জাকির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে দুই ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আব্দুল হাই ২০০১ সালে বিএনপির সংসদ সদস্য আব্দুল ওহাবকে পরাজিত করে প্রথম ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর থেকে তিনি এ আসন থেকে ৫বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
আব্দুল হাই ১৯৫২ সালের ১ মে ঝিনাইদহের শৈলকুপার মোহম্মদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ফয়জুদ্দিন মোল্যা ও মা ছকিরন নেছা দম্পতির তিন ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সবার ছোট তিনি। তিনি ১৯৬৪ সালে বসন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন এবং স্কুল কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৬৭ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঝিনাইদহ কেসি কলেজে ভর্তি হন। তিনি কেসি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও ১৯৬৯ সালে সরকারি কেসি কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৬৮ সালে মহকুমা ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং ১৯৬৯ সালে বৃহত্তর যশোর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি ঝিনাইদহে স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন। দেশ স্বাধীনের পর আব্দুল হাই ঝিনাইদহ যুবলীগের আহ্বায়ক ও ১৯৭৩ সালে ঝিনাইদহ যুবলীগের মহকুমা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৭ সালে তিনি ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক ও ১৯৯৮ সালে তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৫ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সদস্য আব্দুল হাই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত এ পদে আসীন ছিলেন।
নদী বন্দর/এসএইচবি