ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর মেরামতের কাজ ঈদের আগেই শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পাশাপাশি নতুন করে কোথাও কোনও ধরনের খোঁড়াখুড়ি করে যেন জনভোগান্তি না সৃষ্টি করা হয়, সেই বিষয়েও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বেলা সোয়া ১১টায় রাজধানীর বিআরটিএ কার্যালয়ে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে আয়োজিত এক সভা শেষে তিনি এসব নির্দেশনার কথা জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া যেন কেউ আদায় করতে না পারে, সে বিষয়ে তৎপর থাকতে হবে। এছাড়া, ঈদের আগে-পরে মিলিয়ে সিএনজি স্টেশন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার জন্য পদক্ষেপ নিতে জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নিতে হবে।
তিনি বলেন, ঢাকার বাস টার্মিনালগুলোর বাইরে যেন কোনও বাস দাঁড়িয়ে না থাকতে পারে, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কোনও বাস যেন অতিরিক্ত ভাড়া না আদায় করে, সেই বিষয়ে সবাইকে তৎপর থাকতে হবে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, কুমিল্লা থেকে ৫০ মিনিটের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছে যায়, কিন্তু ফ্লাইওভারে এক ঘণ্ট-দেড় ঘণ্টা যানজটে আটকা থাকতে হয়। এটা কেন হচ্ছে… সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে কথা বলে সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেন। হেলমেট ছাড়া সিএনজি স্টেশনে যেন কেউ তেল দিতে না পারে, আমি মন্ত্রীর লোক, এমপির লোক… এসব বলে যেন কেউ ছাড় না পায়। ঢাকা শহরে লক্কড়-ঝক্কড় বাস দেখতে ভালো লাগে না। ফিটনেসবিহীন কোনও বাস যেন চলতে না পারে, এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন আপনারা।
জানা গেছে, প্রধান সড়কের পাশে যেন কোরবানির পশুর হাট না বসতে পারে, সভায় সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া, বিআরটিএ, পুলিশ কমিশনার, সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সওজ অধিদপ্তর, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে যাত্রী সাধারণের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
তাছাড়া, দেশের সব বাস টার্মিনাল ও মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং সড়কপথে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, পকেটমার, মলম পার্টি ও অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
লক্কড়-ঝক্কড়, ফিটনেসবিহীন ও ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধ করা, ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত মালামাল-যাত্রী পরিবহন না করা, নসিমন, করিমন, ইজিবাইক, থ্রি-হুইলার জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচল বন্ধ নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, বিআরটিসির স্পেশাল ঈদ সার্ভিস, সিএনজি ফিলিং স্টেশন সার্বক্ষণিক খোলা রাখা ও গার্মেন্টসসহ শিল্পকারখানার কর্মীদের পর্যায়ক্রমে ছুটির ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ঈদের দিনসহ এর আগের তিন দিন ও পরের তিন দিন মহাসড়কে পশুবাহী গাড়ি ছাড়া ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ রাখা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য-দ্রব্য, পচনশীল দ্রব্য, গার্মেন্টস সামগ্রী, ওষুধ, সার এবং জ্বালানি বহনকারী যানবাহনকে এর আওতামুক্ত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হবে।
বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ, হাইওয়ে পুলিশ, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, বিআরটি, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির প্রতিনিধিদের পাশাপাশি সব জেলার সংশ্লিষ্টরা সভায় অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।
নদী বন্দর/এসএইচ