বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর তিনি এখন দেশজুড়ে আলোচনায়। ইতোমধ্যে বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী জিশান মির্জা, বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর এবং ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে থাকা বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব ফ্রিজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে বিভিন্ন সম্পত্তির দলিল, ঢাকায় ফ্ল্যাট ও কোম্পানির শেয়ার জব্দের (ক্রোক) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
একজন সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে নেওয়া পদক্ষেপগুলোতে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের মুখে জবাব দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গি-সন্ত্রাস দমন, কোভিডসহ দেশের যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশ বাহিনী জীবন বাজি রেখে কাজ করেছে। এখানে ব্যক্তি অপরাধ করলে তার দায় প্রতিষ্ঠান নেয় না। এটা ব্যক্তিগত বিষয়।’
শনিবার (১ জুন) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে (টিএসসি) ছাত্রলীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ অন্যায় করলে তার শাস্তি দেশের আইন অনুযায়ী হবে। তার (বেনজীর) বিষয়ে তদন্ত চলছে। তিনি অন্যায় করেছেন, না কি নির্দোষ, তিনি কি কর ফাঁকি দিয়েছেন, না কি অন্যভাবে অর্থ সম্পদ গড়েছেন। তদন্ত শেষ হলেই সে অনুযায়ী বিচার করা হবে।’
তদন্ত চলমান অবস্থায় বেনজীর আহমেদ দেশ ছেড়েছেন বলে গুঞ্জন চলছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সে এখনো দেশে আছে না কি বিদেশ চলে গেছে এটা আমি জানি না।’
সম্প্রতি দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে দাবি করা হয়, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় পুলিশের সাবেক এই আইজিপি।
বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ৩৪ বছর ৭ মাস চাকরি করে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে অবসরে যান। অবসর গ্রহণের পর দেখা যায়, বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও কন্যাদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে, যা তার আয়ের তুলনায় অসম।
পরে গত ২৩ মে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বেনজীর আহমেদের ৮৩টি দলিলের সম্পত্তি ও ৩৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়াও গত ২৬ মে বেনজীর আহমেদের নামে, তার স্ত্রীর নামে ও মেয়ের নামে থাকা ১১৯টি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে— রাজধানীর গুলশানে ৪টি ফ্ল্যাট, সাভারের একটি জমি; বাকি ১১৪টি সম্পত্তি রয়েছে মাদারীপুর জেলায়।
নদী বন্দর/এসএইচ