ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এসময় ২৬টি বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয় এবং ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) উপজেলার গেদুরা ইউনিয়নের আটঘড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আটঘড়িয়া গ্রামের এক একর এক বিঘা জমি ও বসতভিটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াসিন (৪৫) ও মাহতাব (৩৫) নামের দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল। শুক্রবার সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে এই বিরোধ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। উভয় পক্ষ লোহার রড, লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে অন্তত শতাধিক ব্যক্তি আহত হন, যাদের মধ্যে গুরুতর আহত নুর ইসলাম (৫০), মুজিবর ও মোহাম্মদ আলী বর্তমানে ঠাকুরগাঁও জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সংঘর্ষের সময় হামলাকারীরা ২৬টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে, যার ফলে ৪০টি ঘর পুড়ে যায়। এ ছাড়া নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাটের অভিযোগও পাওয়া গেছে।
সংঘর্ষকারীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল বলে দাবি স্থানীয়দের।
ভুক্তভোগী মোজাফফর হোসেন জানান, হামলাকারীরা তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং তার স্ত্রীর গলায় ছুরি ধরে ট্রাঙ্কের ভেতরে থাকা প্রায় দুই লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে হরিপুর ও রাণীশংকৈল ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুজ্জামান ১৪৪ ধারা জারি করেন এবং এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুজ্জামান বলেন, “ দুই পক্ষের এই সংঘর্ষের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পরিস্থিতি এখনো থমথমে। বর্তমানে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।”
হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকারিয়া মন্ডল জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা হয়নি।
নদীবন্দর/এসএন