খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক ও সহকারী ছাত্র বিষয়ক পরিচালক হাসান মাহমুদ সাকিরের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রের ছাত্রত্ব বাতিলসহ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (৩ মে) বিকেলে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভা থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত ছাত্রের স্নাতক ডিগ্রির সনদপত্র স্থগিত থাকবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়।
সিন্ডিকেট সভায় নেওয়া পাঁচটি সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন ভিসি। সেগুলো হলো: ১. অভিযুক্ত ছাত্রের ছাত্রত্ব বাতিল; ২. বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ; ৩. তার স্নাতক ডিগ্রির সনদ বাতিল; ৪. ঘটনাটির বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের; ৫. একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন
অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে নিকটস্থ হরিণটানা থানায় ফৌজদারি আইনে মামলা করা হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করবেন বলেও জানান ভিসি।
তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে প্রফেসর ড. মো. ইমদাদুল হককে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন প্রফেসর ড. মো. খসরুল আলম এবং প্রফেসর ড. মো. আজমল হুদা। কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, শুক্রবার (২ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলা বিভাগের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ নোমান ধাতব বস্তু সহকারী ছাত্র বিষয়ক পরিচালক হাসান মাহমুদ সাকিরের দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং জ্ঞান হারান। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আম চুরি করতে গিয়ে শিক্ষকদের বাধা পেয়ে নোমান ওই হামলা চালান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় শিক্ষককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল থেকে শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। তারা রাত আড়াইটা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অবস্থান করে অভিযুক্ত ছাত্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান এবং তাকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
সিন্ডিকেট সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে উপাচার্যের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ খানসহ অন্যান্য শিক্ষকরা।
নদীবন্দর/এএস