গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে তা বিপদ সীমার ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অব্যাহত পানি বৃদ্বির ফলে পদ্মায় তীব্র স্রোতের টানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ফেরির প্রতি টিপে আগের চেয়ে দ্বিগুন সময় বেশি লাগছে। এতে দৌরতদিয়া প্রান্তে রোববার দিনভর তীব্র যানজট চলছে। নদী পারে অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় ২ শতাধিক বাস, ট্রাক ও প্রাইভেটকার।
এদিকে পদ্মায় পানি বৃদ্বির ফলে প্রচণ্ড ঘূর্নায়মান স্রোতের টানে রাজবাড়ী গোজার বাজার এলাকার নদী তীর সংরণ বাঁধে ফের ধ্বস হয়েছে। শনিবার ও রোববার বৃষ্টি ও স্রোতের টানে রাজবাড়ী শহর রক্ষা বেরী বাধের ডান তীর সংরক্ষণ বাধের গোদার বাজার এলাকার প্রায় ধ্বসে ২৫ ফুট এলাকা সিসি ব্লকসহ পদ্মা নদীর পেটে চলে গেছে। এ কারণে ভাঙ্গন স্থান থেকে মাত্র এক শত মিটার দুরত্বে থাকা রাজবাড়ী শহর রা বন্য নিয়ন্ত্রণ বেঁডি বাঁধ হুমকীতে পড়ে গেছে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল আহাদ জানান, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি, তীব্র স্রোত ও বাতাসের কারণে হঠাৎ করেই ভাঙ্গণের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজবাড়ী শহর বা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেঁডি বাঁধ সংলগ্ন গোদার বাজার গোলাম মোস্তফার ইট ভাটা এলাকায় প্রায় ২০ ফুট সিসি ব্লকসহ ধ্বসে গেছে। আগেও এ স্থানে পাশে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ১২০ মিটার এলাকা ধ্বসে যায়। গত ২৮ সেপ্টেম্বর ওই ভাঙ্গণ ঠেকাতে একহাজার বালু ভর্তি জিও ব্যাগ নদীতে ফেলা হয়েছিল। এখন তার অল্পকিছু ভাটিতে আবার ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে। তাই গত ৩ ও ৪ অক্টোবর পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই ভাঙ্গন ঠেকাতে জরুরী ভিত্তিতে ১০হাজার জিও ব্যাগ ভাঙ্গণ স্থলে ডাম্পিং করা হচ্ছে।
বর্তমান পরিস্থিতি দেখতে শনিবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী ওহেদুজ্জামান, সহকারী পরিচালক কাজী তোফায়েল আহম্মেদসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্ধর্তন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। একই সাথে উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। পদ্মায় আরো ২/৩দিন পানি বাড়তে পারে। ওই ভাঙ্গনস্থল থেকে রাজবাড়ী শহর রক্ষা বেরী বাধঁ এখন মাত্র অল্প দুরে থাকায় বাঁধটি হুমকির মধ্যে রয়েছে। তবে আশা করছেন ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা সম্ভভ হবে।
চতুর্থ দফায় পানি বৃদ্বির ফলে পদ্মা নদীবর্তী গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া, দেবগ্রাম, ছোট ভাকলা ও উজানচর ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা ফের প্লাবিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি পদ্মায় বয়ে যাওয়া প্রবল স্রোত ও পানির ঘূর্ণিপাকে উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের আজিজ মুন্সীর পাড়া ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ব্যাপারীপাড়া গ্রাম এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে।
ওই এলাকার প্রায় তিন শত পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে, গাছপালা কেটে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে। রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস জানায়, এসব এলাকার চরাঞ্চলের সদ্য বোনা প্রায় এক হাজার বিঘা মাস কলাই পানি তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
নদী বন্দর/এবি