1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
জামালপুরে যমুনা ও দশানী নদীতে তীব্র ভাঙন, বসতবাড়ি-ফসলি জমি বিলীন - Nadibandar.com
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০৯:০৭ অপরাহ্ন
নদীবন্দর, জামালপুর
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫
  • ১ বার পঠিত

জামালপুরে কয়েকদিনের টানা ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে যমুনা ও দশানী নদীর কয়েক কিলোমিটার জায়াগা জুড়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে শতশত একর ফসলি জমি ও বসতবাড়ি। ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেও কোনও ভাবেই ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না।

এদিকে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে সড়কের পাশে দুচালা বানিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। এছাড়া ফসলি জমি হারিয়ে কাজ না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন অনেক পরিবার। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রশাসন।

জানা গেছে, গত কয়েকদিন থেকে প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর ও মাদারগঞ্জ জেলার যমুনা নদীর বাম তীরে এবং বকশীগঞ্জ উপজেলার দশানী নদীতে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের চর ডাকাতিয়াপাড়া এলকায় তীব্র ভাঙানের কারণে কয়েকশ একর জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। অর্ধশতাধিক বাড়ি ঘর ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের কারণে ওই এলাকার একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নিলামে বিক্রি করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে বকশীগঞ্জের দশানী নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে গত এক সপ্তাহে নদীর দুপাড়ে প্রায় ৬ কিলোমিটার জায়াগায় তীব্র ভাঙনের কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে উপজেলার মেরুরচর ও সাধুরপাড়া ইউনিয়নের ৮ গ্রামের মানুষ। নদীতে বিলীন হয়েছে প্রায় ৭০টি পরিবার। উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের ঘুঘরা কান্দি, আইরমারী মন্দী পাড়া, উজান কলকিহারা, কলকিহারা ও খাপড়া পাড়া গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের বসতভিটা নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। সেইসঙ্গে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চর আইরমারী, বাংগাল পাড়া ও বালুগ্রামের ফসলি জমিও নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। নদী ভাঙনের ফলে বসত ভিটা, ফসলি জমি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে পরিবারগুলোকে।

ঘুঘরাকান্দি এলাকার মকবুল মন্ডল বলেন, প্রতি বছরের মতো এ বছরও নদী ভাঙার কারণে ভিটা মাটি ও ফসলি জমি হারিয়ে বিপদের মধ্যে আছি। কবে সরকার ব্যবস্থা নেবে তাও জানি না। আমাদের কি অবস্থা হবে এই নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। সরকারের উচিত তাড়াতাড়ি ভাঙন বন্ধ করার জন্য স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আসাদুজ্জামান জানান, দ্রুত জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা না হলে এই পাঁচ গ্রামের কোনও অস্তিত্বই থাকবে না। যাদের টাকা পয়সা আছে তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘরবাড়ি নিয়ে গেছে, আবার অনেকে রাস্তার পাশে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি কামনা করছি।

অন্যদিকে প্রতিবছরের মতো এ বছরও ইসলামপুর উপজেলার সাপধরী ইউনিয়নের কাশারীডোবা পয়েন্টে যমুনার একটি শাখা নদীতে শুরু হয়েছে ভাঙন। ইতোমধ্যে কয়েক বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়াও নদীগর্ভে বিলীনের হুমকির মুখে পড়েছে কাশারীডোবা এলাকার পাঁচটি মসজিদ, দুটি বাজার, পাঁচ শতাধিক বসতভিটা, তিনটি স্কুল এবং কয়েকশ একর ফসলি জমি।

জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার পাকরুল, হিদাগাড়ী, মানিকদাইর এলাকার ভাঙনের চিত্রও অনেক ভায়াবহ। যমুনার করাল গ্রাসে তছনছ হয়ে গেছে ওই এলাকার চিত্র। অসময়ে যমুনা নদীর ভাঙনে কয়েকগুণ দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে নদী পাড়ের মানুষের। পাকরুল এলাকায় ভাঙন হুমকিতে রয়েছে সাধারণ মানুষের চলাচলের রাস্তা, মসজিদ, মাদ্রাসা, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। হঠাৎ নদী ভাঙনের ফলে উঠতি ফসল ভুট্টা, মরিচ ও আখসহ অন্যান্য ফসলি জমি প্রতি নিয়ত বিলীন হচ্ছে। এসব এলাকার কৃষকরা দোকান থেকে বীজ, সার ও কীটনাশক বাকিতে ক্রয় করে ফসল আবাদ করেছেন।

একদিকে নদী গর্ভে ফসলসহ জমি নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে, অন্যদিকে দোকানের বাকি এবং ঋণের বোঝায় জর্জরিত নদী পাড়ের অসহায় কৃষকরা।

পাকরুল এলাকার কৃষক আবুল কাশেম বলেন, নদী ভাঙছেই। অনেক টাকার জিনিসপত্র বাকিতে নিয়ে চাষ করেছিলাম, এখন জমির সঙ্গে ফসলও গেছে। বাড়িঘর নিয়ে বিপদে আছি ঋণ পরিশোধ করবো কি দিয়ে?।

বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা জানান, নদীভাঙন এলাকার খোঁজ নিয়েছি। ওই এলাকার যে পরিবারগুলো নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে তাদেরকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা ও ভাঙন রোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান বলেন, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বড়খাল ও চিকাজানি ইউনিয়নের খানপাড়া এলাকায় ৬০ ও ৬৭ মিটারের দুটি প্যাকেজের কাজ হয়েছে। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার দশানী নদীতে মেরুররচর ও খাপরাপাড়া এলাকায় দুই প্যাকেজে ২০০ মিটার কাজ চলমান রয়েছে। জেলার ২১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী বাধ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়াও নিরীক্ষা প্রতিবেদনের উপর নির্ভর করে স্থায়ী প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

নদীবন্দর/ এএস

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com