1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
জুলাইয়ে যেসব স্লোগানে কেঁপেছিল হাসিনার মসনদ - Nadibandar.com
শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:১৯ অপরাহ্ন
নদীবন্দর, ঢাকা
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫
  • ১ বার পঠিত

২০২৪ সালের জুলাই মাসে দেশজুড়ে যে গণআন্দোলন দেখা গেছে, তার অন্যতম চালিকাশক্তি ছিল স্লোগান। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে শুরু হওয়া এই গণজোয়ারে রাজপথ কাঁপিয়েছে অসংখ্য নতুন ও সৃষ্টিশীল স্লোগান। আন্দোলনকারীরা শুধু দাবি তুলেই থেমে থাকেনি, তারা ভাষা দিয়ে লড়েছে, বাক্য দিয়ে প্রতিরোধ গড়েছে। সেসব স্লোগানে মুখর ছিল শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত।

‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ কিংবা ‘কে বলেছে কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার’—এমন স্লোগানগুলো ছিল শুধুমাত্র আওয়াজ তোলার মাধ্যম নয়, এগুলো মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। এগুলো শুনে রাজপথে নেমে এসেছে হাজার হাজার মানুষ। নতুন প্রজন্মের পাশাপাশি অনেক প্রবীণকেও দেখা গেছে রাজপথে, এই ভাষার ডাক উপেক্ষা করতে পারেননি তারা।

স্লোগানগুলো তৈরি হয় রাজপথে, চলমান প্রতিরোধের ভেতরে। আন্দোলন যত এগিয়েছে, স্লোগানও তত রূপ বদলেছে। একেকটি স্লোগান যেন হয়ে উঠেছে একেকটি গল্প, একেকটি অভিমত, একেকটি প্রতিবাদের ভাষা। দেয়াল লিখনেও ছিল সেসব স্লোগানের ছাপ। ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’—এই লাইনটি যেমন আন্দোলনে আবু সাঈদের উপস্থিতি জানান দেয়, তেমনি বোঝায়, গোটা আন্দোলনে তার মতো লাখ লাখ মানুষ বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

জুলাইয়ের পুরো মাসজুড়ে এমন শত শত স্লোগান দেশের বিভিন্ন জায়গায় উচ্চারিত হয়েছে। ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘দালালি না রাজপথ’—এসব স্লোগান বারবার ফিরেছে প্রতিটি সমাবেশে, মিছিল ও মানববন্ধনে। শুধু কথার মধ্যে নয়, এসব শব্দ আন্দোলনের শক্তি হয়ে উঠেছিল, যা অগণিত মানুষের মনে সাহস ও স্বপ্ন জুগিয়েছে।

জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল এর ভাষার বৈচিত্র্য। আগের রাজনৈতিক আন্দোলনগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, এবারের আন্দোলনে জেনারেশন জি বা নতুন প্রজন্ম ভিন্ন ধাঁচের ভাষা ব্যবহার করেছে। তারা বাংলা ও ইংরেজির মিশ্রণে নতুন ধরনের শব্দ ও বাক্য তৈরি করেছে। যেমন—‘March for Justice’, ‘Bangla Blockade’, ‘From Black to Red Revolution’—এমন শব্দবন্ধ আন্দোলনের পোস্টার, প্ল্যাকার্ড, ফেসবুক পোস্ট ও হ্যাশট্যাগে ঘুরে ফিরে এসেছে।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক হাসিবুল ইসলাম জানান, আমরা এই প্রজন্মের মানুষ। আমাদের কথা বলার ধরন আলাদা। তাই আন্দোলনেও আমরা সেই ভাষা ব্যবহার করেছি, যেটা আমাদের চিন্তাধারার সঙ্গে যায়। তার মতে— এই ভাষার মধ্য দিয়েই নতুন প্রজন্ম বুঝিয়ে দিয়েছে, আন্দোলন কোনো দলের জন্য নয়, এটা সমগ্র জাতির জন্য।

আন্দোলনকারীরা স্যাটায়ার, র‍্যাপ, মিম, ট্রেন্ডিং টার্ম ব্যবহার করে একদিকে যেমন তরুণ সমাজকে জড়ো করেছে, তেমনি রাজনৈতিক বার্তাও পৌঁছে দিয়েছে সাধারণ মানুষের কাছে। ফলে আন্দোলনটি হয়ে উঠেছে দলনিরপেক্ষ, স্বতঃস্ফূর্ত এবং নাগরিক শক্তির বহিঃপ্রকাশ। কোনো রক্তচক্ষু, কোনো নিষেধাজ্ঞা কিংবা সরকারি ভাষ্য এই স্লোগানগুলোর প্রবাহকে থামাতে পারেনি।

আন্দোলনের বাস্তবতা অনুযায়ী সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্লোগানও বদলেছে। কখনো স্লোগান হয়েছে তীব্র প্রতিবাদী, কখনো ব্যঙ্গাত্মক, কখনো আবেগঘন। কিন্তু প্রতিটি স্লোগান ছিল আন্দোলনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত। একেকটি স্লোগান যেন একেকটি সময়কে প্রতিফলিত করেছে। কখনো এই স্লোগান একতাবদ্ধ করেছে ভাঙা মন, কখনো আবার সাহস জুগিয়েছে হতাশ কর্মীদের।

নদীবন্দর/এএস

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com