জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত সব পুলিশ কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) ন্যাশনাল লইয়ার্স কাউন্সিলের (এনএলসি) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এস এম জুলফিকার আলী জুনু এ নোটিশ পাঠিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপিকে পাঠানো ওই নোটিশে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এজাহারভুক্ত সব পুলিশ কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ চাওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্ট মাসের নৃশংস ঘটনায় দায়েরকৃত প্রায় সাত শতাধিক হত্যা মামলায় বহু পুলিশ অফিসার এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
আইনের মৌলিক নীতি হলো- কোনো মামলার এজাহারভুক্ত আসামি যদি দায়িত্বশীল পদে বহাল থাকেন, তবে মামলার তদন্ত কার্যক্রম, সাক্ষ্যগ্রহণ ও বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার সুস্পষ্ট আশঙ্কা থাকে। আসামিরা বর্তমানে পুলিশ বাহিনীর দায়িত্বশীল পদে বহাল থাকায় তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতে তাদের চাকরিতে বহাল থাকা অনুচিত ও অগ্রহণযোগ্য।
বাংলাদেশ সার্ভিস রুলসে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের তদন্ত চলাকালীন অবস্থায় তাকে জনস্বার্থে সাময়িক বরখাস্ত করা যেতে পারে।
পুলিশ রেগুলেশনে বলা আছে, যদি কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ আনা হয় বা মামলা দায়ের হয়, তবে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনবোধে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে পারে।
আইন অনুযায়ী পরিষ্কারভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এজাহারভুক্ত পুলিশ অফিসারদের পদে বহাল রাখা আইন, ন্যায়বিচার ও জনস্বার্থের পরিপন্থী। তাই অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
অ্যাডভোকেট এস এম জুলফিকার আলী জুনু বলেন, যদি এ বিষয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয়, তবে আমি বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হবো।
এদিকে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সাবেক ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদসহ ১৮ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ বিষয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। উপসচিব নাসিমুল গনি এতে স্বাক্ষর করেন।
বরখাস্তাদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ‘পলায়নের শাস্তিযোগ্য অপরাধে’ অভিযুক্ত। বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(গ) অনুচ্ছেদ ও বিধি ১২(১) অনুযায়ী তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
তবে বরখাস্তকালীন সময় তাদের খোরপোষ ভাতা প্রদান করা হবে এবং জনস্বার্থে এ আদেশ প্রয়োগ করা হয়েছে।
বরখাস্তকৃতদের মধ্যে রয়েছেন— তিনজন ডিআইজি, ছয়জন অতিরিক্ত ডিআইজি, চারজন পুলিশ সুপার, চারজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও একজন সহকারী পুলিশ সুপার।
নদীবন্দর/জেএস