জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ভারতীয় নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধজাহাজ বাংলাদেশের মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে। তিন দিনের সফরে সোমবার (৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় বন্দর জেটি এলাকায় পৌঁছায় যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কুলিশ ও আইএনএস সুমেদা।
প্রথমে বন্দরের ৯নং জেটিতে এসে নোঙর করে। এ সময় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সুসজ্জিত বাদক দল ঐতিহ্যবাহী রীতিতে ব্যান্ড পরিবেশন করে জাহাজ দুটিকে অভিবাদন জানায়। বানৌজা মোংলা নৌঘাঁটির অধিনায়ক ক্যাপ্টেন এম মোশারেফ হোসেন, এন, পিএসসি, বিএন ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ দুটির অধিনায়ককে ফুল দিয়ে স্বাগত জানায়। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতিনিধিসহ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সফরকালে ভারতীয় নৌবাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা কমোডর মাহাদিভু গোভারধান রাজু ও জাহাজ দুটির অধিনায়করা টুঙ্গিপাড়ার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। পাশাপাশি তারা কমান্ডার খুলনা নেভাল এরিয়া এবং কমান্ডার ফ্লোটিলা ওয়েস্ট এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীরমুক্তি যোদ্ধাসহ নৌ কমান্ডোদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
বাংলাদেশ অবস্থানকালে ভারতীয় নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বানৌজা পদ্মা ও বানৌজা পলাশ জাহাজে ব্যবহৃত ৪১/৬০ মিঃ মিঃ গান এ্যকুয়াসটিক এম কে-০৭ মাইন শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে প্রদান করবে। এসব গান ও মাইন যুদ্ধকালীন মোংলা ও পশুর নদীতে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনায় ব্যবহৃত হয়েছিল। সামরিক জাদুঘরে প্রদর্শনের জন্য ভারতীয় নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে এসব সরঞ্জামাদি প্রদান করা হবে।
এর আগে সফরকারী জাহাজ দুটি বাংলাদেশি জলসীমায় এসে পৌঁছলে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বানৌজা গৌমতী তাদেরকে স্বাগত জানায়। ১৮ জন কর্মকর্তা ও ১৬০ জন নাবিকসহ ‘আইএনএস কুলিশ’ জাহাজের নেতৃত্বে আছেন কমান্ডার সঞ্জীব অগ্নিহোত্রি এবং ২০ জন কর্মকর্তা ও ১৬০ জন নাবিকসহ ‘আইএনএস সুমেদা’ জাহাজের নেতৃত্বে আছেন কমান্ডার গৌরব দুর্গাপাল। সফরের অংশ হিসেবে জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকরা নৌবাহিনীর জাহাজ/ঘাঁটিসহ মোংলা খুলনার দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করবেন। জাহাজ দুটির এই শুভেচ্ছা সফর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছেন দুই দেশের নৌবাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, তিন দিনের শুভেচ্ছা সফর শেষে জাহাজ দুটি চলতি বছরের ১০ মার্চ বাংলাদেশ ত্যাগ করবে বলেও জানায় মোংলা নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা।
নদী বন্দর / পিকে