না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ঢাকাই সিনেমার সোনালি দিনের সুপারস্টার নায়ক ওয়াসিম। ১৭ এপ্রিল দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
১৯৫০ সালে জন্ম নেয়া এ অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
আজ রোববার (১৮ এপ্রিল) বাদ জোহর ওয়াসিমের দাফন সম্পন্ন হয়। রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তার মরদেহ সমাহিত করা হয়েছে৷
এর আগে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করা ওয়াসিমের মরদেহ রাতেই গোসল দিয়ে ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা হয়। এরপর বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
বনানী কবরস্থান সংলগ্ন মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
জানাজায় ওয়াসিমের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-বন্ধু স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। আরও ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানসহ চলচ্চিত্রের বেশ কয়েকজন।
প্রসঙ্গত, ১৯৫০ সালের ২৩ মার্চ চাঁদপুর জেলার আমিরাবাদে জন্মগ্রহণ করেন ওয়াসিম। তার পারিবারিক নাম মেজবাহ উদ্দীন আহমেদ।
ওয়াসিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
কলেজে ছাত্রাবস্থায় তিনি বডি বিল্ডার হিসেবে নাম করেছিলেন। ১৯৬৪ সালে তিনি বডি বিল্ডিংয়ের জন্য মি. ইস্ট পাকিস্তান খেতাব অর্জন করেছিলেন।
১৯৭২ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক এস এম শফীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। শফীর আগ্রহেই ১৯৭২ সালে তার পরিচালিত ‘ছন্দ হারিয়ে গেল’ চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক হন তিনি। এতে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেন।
১৯৭৪ সালে আরেক প্রখ্যাত চিত্রনির্মাতা মোহসিন পরিচালিত ‘রাতের পর দিন’ চলচ্চিত্রে প্রথম নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ তার। চলচ্চিত্রটির অসামান্য সাফল্যে রাতারাতি সুপারস্টার বনে যান তিনি।
দর্শকনন্দিত এই অভিনেতার নামেই ’৭০ আর ৮০’র দশকে সিনেমা হলে উপচে পড়ত দর্শক। ওয়াসিম অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো- দি রেইন, ডাকু মনসুর, জিঘাংসা, কে আসল কে নকল, বাহাদুর, দোস্ত দুশমন, মানসী, দুই রাজকুমার, সওদাগর, নরম গরম, ইমান, রাতের পর দিন, আসামি হাজির, মিস লোলিতা, রাজ দুলারী, চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা, লুটেরা, লাল মেম সাহেব, বেদ্বীন, জীবন সাথী, রাজনন্দিনী, রাজমহল, বিনি সুতার মালা, বানজারান, মিস লোলিতাসহ দেড় শতাধিক সুপার হিট ছবির নায়ক এই কিংবদন্তি অভিনেতা।
নদী বন্দর / জিকে