ইতালির প্রত্নতত্ত্ববিদরা প্রাগৈতিহাসিক কালের নিয়ানডার্থাল মানবের নয়টি দেহাবশেষের সন্ধান পেয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে তারা হায়েনার কাছে শিকার হয়েছিল। রোমের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি প্রাগৈতিহাসিক গুহায় এই কঙ্কালগুলো পাওয়া গেছে। খবর বিবিসির।
এসব কঙ্কালের হাড়গুলো জীবাশ্মে (ফসিল) পরিণত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মাথার খুলি, ভেঙ্গে যাওয়া চোয়াল প্রভৃতি। উপকূলীয় শহর স্যান ফেলিস সিরসেও’র গুয়াত্তারি গুহায় এগুলো পাওয়া গেছে।
নিয়ানডার্থালরা বর্তমান মানুষের প্রজাতি হোমো স্যাপিয়েন্সের কাছাকাছি একটি প্রজাতি। ধারণা করা হয় এরা ৪০ হাজার বছর আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়। তবে আধুনিক মানুষের দেহেও নিয়ানডার্থালের ডিএনএর কিছু চিহ্ন রয়ে গেছে।
ইতালির সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জানায়, গুহায় পাওয়া নয়টি দেহাবশেষের মধ্যে আটটি ৫০ হাজার থেকে ৬৮ হাজার বছরের পুরনো। আর সবচেয়ে পুরনোটি ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ বছরের পুরনো।
রোম থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে গুয়াত্তারি গুহায় যে প্রত্নতত্ত্ববিদরা এসব জীবাশ্ম খুঁজে পেয়েছেন তারা জানিয়েছেন, দেহাবশেষের সাতটি প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ, একটি নারী এবং একটি কিশোর ছেলে।
তোর ভেরগাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদ্যার অধ্যাপক মারিও রোলফো বলেন, গুহায় পাওয়া অধিকাংশ নিয়ানডার্থালই হায়েনার হাতে নিহত হয়েছে এবং এদের দেহগুলো খাওয়ার জন্য হায়েনারা গুহায় টেনে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘এসব পশুর শিকার ছিল নিয়ানডার্থালরা। হায়েনারা এদের শিকার করত, বিশেষ করে সবচেয়ে দুর্বল, অসুস্থ বা বয়স্কদের।’
ইতালির সংস্কৃতিমন্ত্রী দারিও ফ্রান্সেসচিনি বলেছেন, এটি ‘একটি অসাধারণ আবিষ্কার যা নিয়ে সারা বিশ্ব কথা বলবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই আবিষ্কার নিয়ানডার্থাল সম্পর্কিত জ্ঞান আরও সমৃদ্ধ করবে।’
১৯৩৯ সালে ঘটনাক্রমে গুয়াত্তারি গুহায় নিয়ানডার্থালদের দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল। সেই ঘটনা সম্পর্কে মন্ত্রণালয়ের মন্তব্য, এর ফলে ‘নিয়ানডার্থাল মানবের ইতিহাসের জন্য এটি বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পরিণত হয়।’
গুহাটি প্রাচীনকালের কোনো ভূমিকম্প বা ভূমিধসের কারণে বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে গুহার ভেতরের বস্তুগুলো সংরক্ষিত থেকে গেছে।
নদী বন্দর / জিকে