এখন চলছে আমের ভরা মৌসুম। পিরোজপুরেও আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে গতবছর আম পাড়ার আগ মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় জেলার প্রায় সব বাগান। আম নষ্ট হয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন চাষি ও বাগান মালিকরা।
চলতি মৌসুমে তীব্র দাবদাহ ও সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় এবার পিরোজপুরের আম আকারে অনেকটা ছোট হয়েছে। তবে বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব না পড়ায় গাছের ফল গাছেই রয়েছে। এতেই খুশি চাষি ও বাগান মালিকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এ জেলায় বাণিজ্যিকভাবে আম চাষের প্রতি সাত উপজেলার কয়েক হাজার মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। এ অঞ্চলে একযুগ ধরে বাণিজ্যিকভাবে আমের চাষ হচ্ছে।
এ বছর ৬০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আম চাষ করা হয়েছে। আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। আম পালি বারি-৪, হিমসাগর, রেঙ্গুন, হাঁড়িভাঙা, গুরমতি ও ল্যাংড়া জাতের আমও চাষ হয়েছে। এ বছর আমের ফলন ভালো হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগানে থোকায় থোকায় আম ঝুলছে। পালি জাতের আম পাকার সময় হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই গাছ থেকে আম পেড়ে পাইকারদের কাছে বিক্রি করবেন চাষিরা। এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আমের পাইকাররা চলে এসেছেন বাগানে।
বাগান মালিক তরুন কান্তি ও স্বপন মন্ডল জানান, গতবারের তুলনায় এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। তবে আমের বাজার মন্দা হলে লোকসানও গুনতে হতে পারে।
এদিকে লাভজনক হওয়ায় আম চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন গ্রামের বেকার যুবকরা। তাদের অনেকেই আম চাষ শুরু করেছেন।
সোহেল সেখ নামের এক যুবক বলেন, ‘বাড়ি বেকার সময় কাটছে। কী করবো তার নির্দিষ্ট করে ঠিক করতে পারছিলাম না। কয়েকবছর ধরে জেলা আমের ভালো ফলন দেখা যাচ্ছে। তাই আমিও এ বছর আম গাছের চারা রোপণ করবো।’
মামুন হাওলাদার নামে আরেক যুবক বলেন, ‘আমার দুই বিভা জমি আছে। ওই জমি আম বাগানের জন্য জন্য প্রস্তুত করছি।’
পিরোজপুর জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক চিন্ময় রায় বলেন, ‘এবার আমের ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে দাম ভালো থাকলে চাষিরা লাভবান হবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেলায় আম চাষের সঙ্গে দুই থেকে আড়াই হাজার কৃষক জড়িত আছে। ফলন বাড়াতে তাদের প্রতিনিয়তই পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে কৃষি বিভাগ।’
নদী বন্দর / এমকে