ক্যাবল ব্যবস্থা অবশ্যই ডিজিটালাইজ (তারবিহীন ডিশ লাইন সংযোগ) করতে হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, ডিজিটালাইজ না হওয়ার কারণে সরকার বছরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। একই সঙ্গে কোনো কোনো টেলিভিশন পে-চ্যানেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চাইলেও পারছে না।
সোমবার (১১ অক্টোবর) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে হাছান মাহমুদ বলেন, যেসব বিদেশি টেলিভিশন ক্লিনফিডবিহীন বিজ্ঞাপন দিয়ে পাঠাতো, সেগুলো বন্ধ রেখেছি। শুরুতে যেসব টেলিভিশন ক্লিনফিড পাঠাতো, ক্যাবল অপারেটররা সেগুলোও বন্ধ রেখেছিল। পরবর্তীতে আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দেওয়ার পর সেগুলো চালু হয়েছে।
তিনি বলেন, ক্লিনফিড পাঠানোর দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট চ্যানেলের, ব্রডকাস্টারদের। এখানে তাদের যারা এজেন্ট আছে তাদেরও কিছুটা দায়িত্ব আছে। অন্যদের দায়িত্ব এটা না। ওই চ্যানেলগুলো আমাদের দেশে ক্লিনফিড পাঠাতো না তবে শ্রীলঙ্কা-নেপালে ক্লিনফিড পাঠাতো।
‘আমাদের এখানে না পাঠানোর কারণ হচ্ছে যারা চ্যানেলগুলো চালাতো, তারা দেশের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতো। তাদের সহায়তায় এই ব্রডকাস্টাররা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতো। ১ তারিখ আইন কার্যকর করার পরও ডার্টিফিডের পক্ষে এখানে সংবাদ সম্মেলন করেছে। এরাই কিন্তু বছরের পর বছর দেশের আইনকে তোয়াক্কা না করার ওকালতি করেছে বিদেশি চ্যানেলগুলোর পক্ষে। যেটা সমীচীন হয়নি।’
মন্ত্রী বলেন, আমরা ক্লিনফিড বাস্তবায়ন করেছি এবং অবশ্যই অব্যাহত থাকবে। তারা ক্লিনফিড লিংক পাঠালে এখানে সম্প্রচার হবে, তাতে কোনো বাধা নেই, আমাদের আকাশ উন্মুক্ত।
হাছান মাহমুদ বলেন, যে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ১ অক্টোবর থেকে ক্লিনফিড বাস্তবায়ন করা হবে সে বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল ১ নভেম্বর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ মেট্রোপলিটন শহরগুলোতে ডিজিটাইজেশন নিশ্চিত করা হবে। আমি সেটি আবার মনে করিয়ে দিচ্ছি। তবে ক্যাবল অপারেটরদের পক্ষ থেকে একটি আবেদন দেওয়া হয়েছে, সেটি কি আবেদন তা এখনও আমার টেবিলে আসেনি। সেটি আমরা দেখব। তবে অবশ্যই ডিজিটাইজ করতে হবে।
তিনি বলেন, ক্যাবল অপারেটররা ফিড অপারেটরের মাধ্যমে সম্প্রচার করে। এখন ফিড অপারেটর ১০ হাজার বা এক হাজার জনকে লাইন দিয়েছে, কিন্তু সে দেখায় ২০০ জনকে লাইন দিয়েছে। শুধু দুইশ জনের পয়সায় ফিড অপারেটরের কাছ থেকে ক্যাবল অপারেটর পায়। সুতরাং ডিজিটালাইজ হলে দেশের লাভ, দেশের অর্থনীতির লাভ এবং এ সম্প্রচার মাধ্যমের সঙ্গে জড়িত টেলিভিশন ক্যাবল অপারেটরসহ সবাই লাভবান হবেন।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রেস ক্লাবে আলোচনা সভা, সরকারের বিরুদ্ধে আলোচনা সভা, সরকারের পক্ষে আলোচনা সভা, সিভিল সোসাইটির আলোচনা সভা- এগুলো হতেই পারে। নয়াপল্টনের কার্যালয়ের সামনে যে ধরনের সমাবেশ হয়, প্রেস ক্লাবকে সে ধরনের সমাবেশস্থল বানানো মোটেই সমীচীন হয়নি। যেটি গতকাল বিএনপি করেছে।
তিনি বলেন, প্রেস ক্লাব দল-মত নির্বিশেষে সাংবাদিকদের প্রতিষ্ঠান। এটি একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান। রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে যে ধরনের সমাবেশ করা হয় এখানে সে ধরনের সমাবেশ করা সমীচীন নয়। যেটি মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেবরা গতকাল করেছেন। এটি করে প্রেস ক্লাবের পবিত্রতা, মান-মর্যাদা নষ্ট করা হয়েছে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।
তিনি আরও বলেন, উনাদের গণঅভ্যুত্থানের কথা সাড়ে ১২ বছর ধরে শুনে আসছি। গত সাড়ে ১২ বছরের উন্নয়নের কারণে প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে কি বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য?
হাছান মাহমুদ বলেন, ক্ষমতায় বসে আবার পেট্রলবোমার রাজনীতি করবে, ৫০ জায়গায় বোমা ফোটাবে। দেশকে আবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করবে। শায়খ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাই এগুলোর সৃষ্টি করবে। এজন্য বিএনপির পক্ষে মানুষ কখনো নামবে না। অবশ্যই সরকারের তারা সমালোচনা করতে পারে। দিনের বেলা স্বপ্ন দেখার মতো মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেবরা স্বপ্ন দেখছেন। প্রায় তারা বলেন, জাতীয় ঐক্য করতে হবে। যে ঐক্যটা তারা করেছিলেন বেলুনের মতো উবে গেছে। বেলুনের বাতাস চলে গেলে যেমন চুপসে যায়, তাদের ঐক্যটাও বেলুনের মত চুপসে গেছে।
নদী বন্দর / এমকে