মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম অবশেষে খালাস পেয়েছেন। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ের ভিত্তিতে আজ বুধবার (২৮ মে) সকালে তিনি মুক্তি পাচ্ছেন।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গতকাল মঙ্গলবার এক রায়ে তাকে খালাস দেন। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। আদালত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ২০১৪ সালের মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে বলেন, অন্য কোনো মামলা না থাকলে আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দিতে হবে।
রায়ের অনুলিপি মঙ্গলবার রাতেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পাঠানো হয়। কারণ, বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন তিনি।
ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, খালাসের কাগজপত্র রাতে দেরিতে পৌঁছায়। যাচাই-বাছাই শেষে তা হাসপাতালের প্রিজন সেলে পাঠানো হয়েছে। নিরাপত্তার দিকটি বিবেচনা করে রাতেই তাকে মুক্তি না দিয়ে আজ সকালে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে আজহারুল ইসলামকে বিএসএমএমইউ-এর প্রিজন সেল থেকে মুক্তি দেওয়া হবে। এ উপলক্ষ্যে দলটির পক্ষ থেকে তাকে স্বাগত জানানো হবে।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানান, দলের নেতাকর্মীরা আজহারের মুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে দেখছেন এবং তাকে অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুতি নিয়েছেন।
দলীয় সূত্র বলছে, আজহারের মুক্তিকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে দলের ইউনিটগুলো শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে।
আদালতে আসামিপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক ও শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম। এ মামলার আপিল শুনানি শুরু হয় চলতি মাসের ৬ মে।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, জুবায়ের, হেলালসহ আরও অনেকে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী এবং দলের অন্য নেতারাও।
নদীবন্দর/জেএস