মুম্বাই থেকে গোয়াগামী একটি প্রমোদতরীতে মাদক-পার্টিতে অংশ নিয়েছিলেন শাহরুখপুত্র আরিয়ান খান। সেখান থেকে ৩ অক্টোবর তাকে আটক করে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। আরিয়ান খানের গ্রেফতারের মধ্যে পুরো বলিউড শাহরুখ খানের পাশে দাঁড়িয়েছে।
সর্বশেষ প্রবীণ অভিনেতা এবং রাজনীতিবিদ শত্রুঘ্ন সিনহাও মুখ খুলেছেন। তিনি মনে করেন, শাহরুখ খানকে টার্গেট করা হচ্ছে। তার সুনাম ক্ষুন্ন করতে তারই পুত্রকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এনসিবির ভূমিকা ও আরিয়ানকে গ্রেফতার করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বলিউডের কিংবদন্তি এই অভিনেতা।
এছাড়াও, তিনি অক্ষয় কুমার এবং অন্যান্যদের মতো কিছু অভিনেতাকে কটাক্ষ করেছেন, যারা এই বিষয়ে এখনো চুপ করে আছেন।
সিনহা এনসিপি নেতা নবাব মালিকের নাম উল্লেখ করতেও ভুলেননি। তিনি বলেন, ‘এসআরকে মালিকের প্রতি শাহরুখের কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত কারণ তিনি এনসিবির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। বিজেপির সঙ্গে যুক্ত দুইজনকে এনসিবির কার্যালয়ে দেখা গিয়েছিল সেটা নিয়ে মালিক কথা বলেছিলেন। এনসিবি যার কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।’
এমনকি তিনি এমন কিছু অভিনেতাদের নিন্দা করেছেন যারা শান্ত হয়ে আছেন যখন সবাই স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছেন শাহরুখের পাশে দাঁড়িয়ে। সিনহা সরাসরি খুব বেশি নাম উল্লেখ করেননি। অক্ষয় ও অনুপম খেরের মতো তারকাদের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেছেন, এনসিবির মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকা দল এবং তাদের মিডিয়া চ্যানেলগুলো বাজেভাবে আক্রোশ মেটাতে বলিউডের ‘খান’কে লক্ষ্য করেছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমকে শত্রুঘ্ন সিনহা বলেছিলেন, ‘কেউ কারো বিপদে এগিয়ে আসতে চায় না। প্রত্যেকেই মনে করে যে এটি অন্য ব্যক্তির সমস্যা এবং তার একাই মোকাবিলা করা উচিত। তারা চায়, ওই ব্যক্তি নিজের জন্য যুদ্ধ করুক। ইন্ডাস্ট্রিতে একগুচ্ছ ভীতু লোক রয়েছে। ‘গদি মিডিয়া’র মতো তারাও ‘গদি শিল্পী’।’
‘গদি মিডিয়া’ মূলত ভারতে একটি প্রতিষ্ঠিত শব্দ যা দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরোধী শিবিরে উচ্চারিত হয়। মোদির হয়ে কথা বলতে পছন্দ করে এবং তোষামোদে ভরিয়ে রাখে এমন মিডিয়াগুলোকেই গদি মিডিয়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যাদের উদ্দেশ্যই হলো মোদির হয়ে কথা বলা ও তার দল বিজেপির এজেন্ডাগুলো বাস্তবায়ন করা। শত্রুঘ্ন সিনহা সেসব মিডিয়া ও মোদি ঘনিষ্ট শিল্পীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
শত্রুঘ্ন সিনহা আরও বলেন, ‘আরিয়ান খান শাহরুখ খানের ছেলে হওয়ার মূল্য দিচ্ছে। শুধুমাত্র সে শাহরুখের পুত্র বলেই আজকের এই পরিণতির শিকার হয়েছে। মুনমুন ধামেচা এবং আরবাজ বণিকের মতো আরও নাম আছে, কিন্তু কেউ তাদের সম্পর্কে কথা বলছে না। শেষবার যখন এমন ঘটনা ঘটেছিল, তখন ফোকাস ছিল দীপিকা পাড়ুকোনের দিকে। যদিও অন্যান্য নাম জড়িত ছিল এবং পরিচিত নামগুলো ছিলো। কিন্তু ফোকাস ছিল কেবল তার উপরই।’
বলিউডের প্রতি ক্ষমতাসীনদের এমর বিরূপ মনোভাব বদলাতে সবার সরব হয়ে সতর্ক থাকা উচিত বলেও মনে করেন হিন্দি সিনেমার একসময়ের এই সুপারস্টার।
নদী বন্দর / জিকে