চিত্রনায়িকা মির্জা ফারজানা ইয়াসমিন তমাসহ (তমা মির্জা) চারজনের বিরুদ্ধে স্বামী হিশাম চিশতীর করা হত্যাচেষ্টা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
সোমবার (১১ জানুয়ারি) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করেননি। এ জন্য ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশিদ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন দিন ধার্য করেন। তমা মির্জা ছাড়া মামলার অন্য তিন আসামি হলেন- তমা মির্জার মা ফাতেমা বেগম, বাবা মির্জা আবু জাফর ও ভাই ওয়াসিম।
এর আগে গত ৬ ডিসেম্বর মির্জা ফারজানা ইয়াসমিন তমাসহ চারজনের বিরুদ্ধে হিশাম চিশতী বাদী হয়ে মামলা করেন। তার আগে গত ৫ ডিসেম্বর রাত ৩টায় রাজধানীর বাড্ডা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং যৌতুকের জন্য মারপিটসহ হুমকি প্রদানের অভিযোগে স্বামী হিশাম চিশতীর বিরুদ্ধে নায়িকা তমা মির্জাও মামলা করেন।
হিশাম চিশতীর মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, মির্জা ফারজানা ইয়াসমিন তমা (তমা মির্জা) ও হিশাম চিশতির মধ্যে প্রায় দেড় বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর বিভিন্ন সময় বাবা-মায়ের প্ররোচণায় হিশামের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা ধার হিসেবে নেন তমা। সেই টাকা ফেরত চাইলে তমা কালক্ষেপণ শুরু করেন।
এ পরিস্থিতিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর হিশাম কানাডা থেকে দেশে এসে তমাকে তার নিজের বাসায় এসে থাকতে বলেন। কিন্তু তিনি নানা অজুহাতে তার বাসায় না গিয়ে বাবার বাসায় থাকেন। এরপর হিশাম শ্বশুরবাড়ি গেলে তার সঙ্গে তমাসহ বাড়ির সবাই খারাপ আচরণ শুরু করেন। একপর্যায়ে গত ৫ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে তমা মির্জার বাবার বাড্ডার বাসায় যেতে বলা হয় হিশামকে। সেখানে নানা বিষয়ে আলোচনার পর ধার নেয়া ২০ লাখ টাকা চাইলে বাসার সদস্যদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়।
একপর্যায়ে বাড়ির সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে হিশামের ওপর আক্রমণ করেন। ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে তাকে খুন করার চেষ্টা করা হয়। এছাড়া লোহার চেয়ার দিয়ে আঘাত করলে ডান হাতে গুরুতর আঘাত পেয়ে মেঝেতে পড়ে যান হিশাম। তিনি চিৎকার শুরু করলে বাসার নিচের দারোয়ান ও আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এদিকে তমা মির্জার মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, বিয়ের পর থেকে তার স্বামী হিশাম চিশতী বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য মারধর করতেন। এছাড়া অকারণে গায়ে হাত তুলতেন। এমনকি ফেসবুকে পরিচয় গোপন করে মানহানিকর কথাবার্তা বলতেন। এছাড়া হিশাম তমা মির্জার বাবা-মাকে ভয়ভীতি দেখান এবং হত্যার হুমকি দেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি প্রকাশের ভয়ভীতি দেখান।
২০১৯ সালের ৭ মে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক হিশাম চিশতীকে বিয়ে করেন তমা মির্জা। বর্তমানে তমা মির্জা দেশে থাকলেও তার স্বামী হিশাম চিশতি কানাডায়। এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৬ জানুয়ারি দিন ধার্য রয়েছে।
নদী বন্দর / জিকে