সারের মূল্য বাড়িয়ে বাজার অস্থিতিশীল কারীদের শনাক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠক থেকে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কেউ সারের বাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে কিনা সেটি চিহ্নিত করার কাজ চলছে। কেউ শনাক্ত হলে তাদের ডিলারশিপ বাতিল করা হবে।
তিনি বলেন, সারের ট্রাক ডিলারদের কাছে পৌঁছতে দেরি হলেই এর সুযোগ নিয়ে মূল্য বাড়িয়ে কৃষকদের দুর্ভোগে ফেলে দেয়। এজন্য কঠোর মনিটরিং করা হচ্ছে। সারের বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসককে মনিটরিং করার নির্দেশনা দেওয় হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, সব জিনিসপত্রের মূল্য বাড়ছে। এই আওয়াজেও কেউ কেউ সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে আমাদের গুদামে পর্যাপ্ত সার মজুত আছে।
এদিকে, কেউ যাতে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে ও দাম বেশি নিতে না পারে সেজন্য তদারকি জোরদার এবং নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম।
এ বিষয়ে সচিব বলেন, দেশে পর্যাপ্ত সার মজুত রয়েছে, কোথাও সারের সংকট নেই। কেউ কেউ গুজব ছড়িয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংকট তৈরি করছে কিনা সে ব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে হবে।
সভায় বলা হয়, রসিদ ছাড়া যেন সার বিক্রি না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ডিলার ও খুচরা বিক্রেতার দোকানে ডিজিটালি সারের মূল্য তালিকা টানিয়ে রাখতে হবে। ডিলারের গুদাম ভিজিট করে সারের অ্যারাইভাল নিশ্চিত করতে হবে। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কৃষি বিভাগ যোগাযোগ রক্ষা করবে এবং নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে। অধিক মূল্যে সার বিক্রির কোনো তথ্য বা সংবাদ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে তা রিপোর্ট করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট ডিলারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সভায় জানানো হয়, চাহিদার বিপরীতে দেশে সব ধরনের সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। বর্তমানে (২৫ আগস্ট পর্যন্ত) ইউরিয়া সারের মজুত রয়েছে ৬ লাখ ৪৯ হাজার মেট্রিক টন, টিএসপি ৩ লাখ ৯৪ হাজার টন, ডিএপি ৭ লাখ ৩৬ হাজার টন, এমওপি ২ লাখ ৭৩ হাজার টন। মজুতের বিপরীতে আমন মৌসুমে (আগস্ট থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত) সারের চাহিদা হলো ইউরিয়া ৬ লাখ ১৯ হাজার টন, টিএসপি ১ লাখ ১৯ হাজার টন, ডিএপি ২ লাখ ২৫ হাজার টন, এমওপি ১ লাখ ৩৭ হাজার টন।
গত বছরের একই সময়ের তুলনায়ও সারের বর্তমান মজুত বেশি আছে। গত বছর এই সময়ে ইউরিয়া সারের মজুত ছিল ৬ লাখ ৬ হাজার মেট্রিক টন, টিএসপি ২ লাখ ২৭ হাজার টন, ডিএপি ৫ লাখ ৫৬ হাজার টন এবং এমওপি ১ লাখ ৯৬ হাজার টন।
নদী বন্দর/এসএইচ