সমতার দাবিতে জাতীয় সংগীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে প্রগতিশীল নারী, শ্রমিক, শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনগুলোর আয়োজনে ‘নারীর ডাকে মৈত্রীযাত্রা’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (১৬ মে) দুপুর সাড়ে ৩টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে এ কর্মসূচি শুরু হয়। ‘নারীর ডাকে মৈত্রীযাত্রা’ কর্মসূচির মূল স্লোগান— ‘আমরা মিলিত হবো সম্মিলিত মুক্তির দাবিতে।’
দুপুর ৩টা থেকেই নারীরা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আসতে শুরু করেছেন। পাশাপাশি রয়েছেন পুরুষরাও। কর্মসূচি উপলক্ষে ছোট একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। কর্মসূচির শুরুতে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। মঞ্চের সামনে শতশত নারী দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠানে শামিল হয়েছেন। তাদের হাতে রয়েছে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ফেস্টুন।
এর আগে সংবাদ সম্মেলন থেকে জানা গেছে, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এর সময় নারীদের সরব উপস্থিতি ও সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু তারপরেও রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারকরা এবং সামাজিক কাঠামো নারীদের সেই ভূমিকার স্বীকৃতি দিতে ব্যর্থ হয়েছে। নারীরা শুধুমাত্র রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নয়, শ্রমক্ষেত্র থেকে শুরু করে শিক্ষাঙ্গন, সংস্কৃতি এবং প্রতিদিনের জীবনে যেভাবে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন, তার মূল্যায়ন এখনও পর্যাপ্ত নয়।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নারী শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী নারী ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার নারীদের ওপর যেসব নিপীড়ন চলছে, তার বেশিরভাগই থেকে যাচ্ছে বিচারের বাইরে। পুঁজিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো এবং ধর্মীয় প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী যৌথভাবে নারীদের প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্যকে আরও শক্তিশালী করছে। নারীদের নিজস্ব স্বরকে দাবিয়ে রাখার অপচেষ্টা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে প্রতিটি ঘটনাতেই।
সংবাদ সম্মেলন থেকে আরও জানানো হয়, এ কর্মসূচি কেবল নারীদের স্বার্থরক্ষা নয় বরং এটি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির আন্দোলনের অংশ। সমাজের সব স্তরের মানুষকে এই যাত্রায় শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয় ‘নারীমুক্তি কোনো একক ইস্যু নয়, এটি শ্রমিক-মজুরের মুক্তি, জাতিসত্তার অধিকার, বাকস্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গেই জড়িত। তাই এই যাত্রা শুধুই নারীর নয়, বরং সকল প্রগতিশীল শক্তির মিলনমঞ্চ।
এ পর্যন্ত কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছে ৫০টিরও বেশি সংগঠন। তাদের মধ্যে রয়েছে— বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, নারী মুক্তি কেন্দ্র, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, হিল উইমেনস ফেডারেশন, আদিবাসী ইউনিয়ন, গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন, বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম, বাংলাদেশ নারী জোট, নারী সংহতি, ছাত্রফ্রন্ট (মার্কসবাদী), তীরন্দাজ, শ্রমিক অধিকার আন্দোলনসহ আরও অনেকে।
নদীবন্দর/জেএস