জাপানের একটি মহাকাশযানের পাঠানো ক্যাপসুল গত সপ্তাহে মহাশূন্য থেকে পৃথিবীতে ফিরে আসার পর এর ভেতরে একটি গ্রহাণুর পাথরের টুকরো পাওয়া গেছে।
বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রাইয়ুগু নামে এই গ্রহাণুর টুকরো সংগ্রহ করে তা একটি ক্যাপসুলে ভরে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিল জাপানের মহাকাশ সংস্থা আইএসএএসের পাঠানো হায়াবুসা-২ মহাকাশযান।
মহাশূন্যের গভীর থেকে (ডিপ স্পেস) এই প্রথম বড় পরিমাণে মাটি-পাথর পৃথিবীতে পাঠানো হলো। যেসব পদার্থ দিয়ে সৌরজগতের সৃষ্টি হয়েছিল, সেসব পদার্থের মধ্যে যেগুলো এখনো টিকে আছে তার একটি হচ্ছে রাইয়ুগু নামের এই গ্রহাণু।
হায়াবুসা-২ মহাকাশযানটি ২০১৮ সালের জুনে প্রথম রাইয়ুগুতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিল। আর ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে হায়াবুসা-২ প্রথমবারের মতো এক কিলোমিটার দীর্ঘ গ্রহাণুটির ওপর অবতরণ করে।
তারপর ট্যান্টালাম নামে একটি ধাতুর তৈরি বুলেট দিয়ে গ্রহাণুটির ওপর ‘গুলি করা হয়’। এতে যেসব টুকরো ছিটকে পড়ে সেগুলোকে সংগ্রহ করা হয় একটি নল দিয়ে।
গত ৫ ডিসেম্বর হায়াবুসা-২ এর নমুনা বহনকারী ক্যাপসুলটি পৃথিবীতে ফিরে আসে। অস্ট্রেলিয়ার উমেরা মরুভূমিতে প্যারাসুটের সাহায্যে এটি নিরাপদে অবতরণ করে।
জাপানি বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত ক্যাপসুলটির তিনটি প্রকোষ্ঠের মধ্যে মাত্র একটি খুলেছেন। বাকি দুটি প্রকোষ্ঠের একটিতে রাইয়ুগুর মাটির নিচের পদার্থ সংগৃহীত হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা রাইয়ুগু গ্রহাণুটি থেকে এমন বিশুদ্ধ পদার্থ সংগ্রহ করতে চেয়েছিলেন যা মহাশূন্যের বিকিরণ বা অন্যান্য কারণে শত কোটি বছরেও পরিবর্তিত হয়ে যায়নি। এ কারণে বিস্ফোরক ব্যবহার করে তামার তৈরি একটি ক্ষেপণাস্ত্রের মতো বস্তু নিক্ষেপ করে গ্রহাণুটির উপরিতলে আঘাত করা হয়।
এর ফলে ২০ মিটার চওড়া একটি গর্ত সৃষ্টি হয় রাইয়ুগুর বুকে। এর পর হায়াবুসা-২ তাতে অবতরণ করে এবং ওই গর্ত থেকে বিশুদ্ধ মহাজাগতিক পদার্থের টুকরো সংগ্রহ করে। বিজ্ঞানীরা ক্যাপসুলের এই প্রকোষ্ঠটি পরীক্ষা করে দেখবেন আরও পরে।
জাপানের মহাকাশ সংস্থা জানায়, ক্যাপসুলের ভেতর থেকে যে গ্যাস সংগ্রহ করা হয়েছে – তাও ওই গ্রহাণু থেকে পাওয়া।
নদী বন্দর / পিকে