কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতা আর ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মতো ঝড়ে শিশির। কুয়াশার রেশ কাটছে না দুপুর পর্যন্তও। ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে সড়কে। শীতে জেলার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। বিশেষ করে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ বেশি বিপাকে পড়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে শ্রমিক, রিকশাচালক, কৃষি দিনমজুরসহ অন্যান্য শ্রমজীবী মানুষ সময় মতো কাজে যোগ দিতে পারছে না।
নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের সুবলপাড় এলাকার পাথর ভাঙ্গা শ্রমিক হাবিব, বদি, মেনহাজ জানান, সকাল সাড়ে সাতটায় সোনাহাট স্থলবন্দরে তাদের কাজে যোগ দিতে হয়। বাড়ি থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার বাই সাইকেল চালিয়ে বন্দরে পৌঁছতে এখন তাদের অনেক কষ্ট হয়। কাজে যোগ দিতে তাদের এক ঘণ্টা দেড়ি হয় ফলে তাদের আয় কমে গেছে। অপরদিকে ঘন কুয়াশা কৃষিতে অনেকটা প্রভাব ফেলেছে। শীতকালীন সবজি বিশেষ করে টমেটো, বেগুন, লাউসহ মরিচের ফলন কমে গেছে।
কচাকাটা ইউনিয়নের কৃষক বাবু মিয়া জানান, অতিরিক্ত কুয়াশা এবং শীতের কারণে তার মরিচ গাছের ফুল ঝড়ে যাচ্ছে। ফলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে না।এদিকে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুকুমার, গঙ্গাধরসহ ব্রহ্মপুত্র নদ অববাহিকার চরাঞ্চলের মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। নদ-নদী এলাকায় তাদের বসত হওয়ায় শীতে তীব্রতার অনুভূতি অনেকটা বেশি। শীতের কারণে বয়স্ক ও শিশুদের কষ্ট বেড়েছে। শীত জনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা।জেলা ত্রাণ শাখা সূত্রে জানা যায়, ৩৫ হাজার কম্বল ৯ উপজেলায় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সেগুলো মাঠ পর্যায় বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়া প্রতিটি উপজেলার জন্য ৬ লাখ করে মোট ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সে টাকায় শীতবস্ত্র কিনে শীতার্তদের দেয়া হবে।কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষক সুবল চন্দ্র সরকার জানান, আজ বুধবার সকালে জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি আরও জানান, ১৭ ডিসেম্বর থেকে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে এবং একটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
নদী বন্দর / জিকে