প্রায় সাতদিন প্রাণান্ত চেষ্টার পর অবশেষে সরানো হয়েছে মিসরের সুয়েজ খালে আটকে পড়া দৈত্যাকার জাহাজ এমভি এভার গিভেনকে। এরপর থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক নৌরুটে ফের নৌযান চলাচল শুরু হয়েছে।
স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল এক্সট্রানিউজের ফুটেজে দেখা গেছে, টাগ বোট পরিবেষ্টিত অবস্থায় ধীরে ধীরে জাহাজটি খালের মাঝ বরাবর এগিয়ে যাচ্ছে। সেসময় তার গতি ছিল ঘণ্টায় ১ দশমিক ৫ নটস (২ দশমিক ৮ কিলোমিটার)।
সুয়েজ ক্যানেল অথরিটির (এসসিএ) এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দৈত্যাকৃতি কন্টেইনার জাহাজ এভার গিভেনকে উদ্ধার এবং ভাসানোর পর এসসিএ সুয়েজ খালে নৌ চলাচল শুরু হয়েছে।’
উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়া এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সে (জাহাজ) এখন মুক্ত।’
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের খবর অনুসারে, ৫০০ মিটার লম্বা, ৫৯ মিটার চওড়া, দুই লাখ ২০ হাজার টনের জাহাজটি ভূমধ্যসাগরের দিকে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারায়। একপর্যায়ে সেটি খালের মধ্যে আড়াআড়ি আটকে যায়।
ধারণা করা হচ্ছে, প্রবল বাতাসের কারণে জাহাজের হাল বিচ্যুত হয়। এরপর তা ঘুরে যায়। জাহাজের তলা খালের নিচে কাদামাটির মধ্যে আটকে ছিল।
আটকেপড়া দানবাকার জাহাজটি সরাতে চেষ্টা চলছিল নানাভাবে। ড্রেজিং-শিপ এনে, টাগ বোট লাগিয়ে, জোয়ারের সময় বেড়ে যাওয়া পানি ও উঁচু ঢেউকে কাজে লাগিয়ে সেটি নড়ানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছিল না।
এভার গিভেন এভাবে আটকে যাওয়ায় ভূমধ্যসাগর বা লোহিত সাগর কোনোদিক থেকেই জাহাজ আসা-যাওয়া করতে পারছিল না। ফলে দুই পাশেই প্রচুর জাহাজ আটকে পড়ে।
সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, খালের দুপাশে কন্টেইনারবাহী, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসবাহী, তেলের ট্যাংকার এবং পশুবাহী অন্তত ৩৬৯টি জাহাজ আটকে পড়েছিল। এর মধ্যে রোমানিয়ারই ১৩টি পশুবাহী জাহাজ ছিল।
সুয়েজ খাল অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপুল ক্ষতির মুখে পড়ে বিশ্ব। প্রতিদিন প্রায় ৬০০ থেকে এক হাজার কোটি ডলার ক্ষতি হয়। এর মধ্যে শুধু মিসরেরই প্রতিদিন ক্ষতি হয় এক কোটি ২০ লাখ থেকে এক কোটি ৪০ লাখ ডলার।
নদী বন্দর / জিকে