ভারতে কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে ২৬ দিন ধরে আন্দোলন করছেন কৃষকরা। এরপরও সরকারের পক্ষ থেকে আইন বাতিলের কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তাই সরকারের ওপর আরো চাপ বাড়াতে চান কৃষকরা। এর অংশ হিসেবে সোমবার (২১ ডিসেম্বর) থেকে রিলে অনশন শুরু করেছেন তারা।
ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, দেশের অন্যান্য রাজ্যের কৃষকদের রিলে অনশনে যোগ দেয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পরবর্তী ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান চলাকালীন থালা বাজিয়ে প্রতিবাদ জানানোর জন্যও দেশবাসীকে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
রোববার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে স্বরাজ ইন্ডিয়ার প্রধান যোগন্দ্র যাদব বলেন, ‘সোমবার থেকে ২৪ ঘণ্টার রিলে অনশন শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দিল্লি সীমানায় প্রতিটি প্রতিবাদস্থলেই এই অনশন শুরু হবে। এক সঙ্গে কমপক্ষে ১১ জন থাকবেন অনশনে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা কৃষকদের আমাদের সঙ্গে যোগ দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
অনশনের পাশাপাশি আগামী দিনগুলোতে আন্দোলন চলাকালীন বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচিও নিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলো।
ভারতে প্রতি বছর ২৩ ডিসেম্বর কৃষক দিবস পালিত হয়। সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে ওই দিন দেশের সকল কৃষককে দুপুরের খাবার না খাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের রাকেশ তিকাইত বলেন, ‘এই কিসান দিবসে দেশের সকল কৃষককে এক বেলা খাবার না খাওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। যারা জাতিকে খাবারের জোগান দেন তারা ক্ষুধার্ত থাকেন। কারণ সরকারের কৃষকবিরোধী পদক্ষেপ। আমি সকলকে অনুরোধ করছি ওই দিন রান্না না করতে এবং কৃষকদের সঙ্গে যোগ দিতে।’
আগামী ২৭ ডিসেম্বর মাসিক ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওই অনুষ্ঠান চলাকালীন প্রতিবাদ জানানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সেই প্রতিবাদে দেশবাসীকে সামিল হওয়ারও আবেদন জানিয়েছেন তারা। করোনাকালে নরেন্দ্র মোদি যেভাবে দেশবাসীকে থালা বাজানোর অনুরোধ জানিয়েছিলেন, ঠিক সেভাবেই ২৭ ডিসেম্বর ‘মন কি বাত’ এর সময় থালা বাজিয়ে প্রতিবাদ জানাতে দেশবাসীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন কৃষকরা।
কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে ২৬ দিন ধরে দিল্লির সিংঘু, তিরকি, ইউপি গেট এবং চিল্লা সীমান্তে অবস্থান নিয়েছেন কৃষকরা। দিল্লির প্রবল শৈত্যপ্রবাহ উপক্ষো করেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এই ২৬ দিনে অন্তত ২৪ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নিজের গায়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন এক শিখ পুরোহিত।
নদী বন্দর / এমকে