1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
নড়াইলে উস্তা চাষে স্বাবলম্বী ৫০০ কৃষক - Nadibandar.com
বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১০ মে, ২০২১
  • ২০১ বার পঠিত

“এমনও দিন গেছে পরিবারের সদস্যদের দু’বেলা দু’মুঠো ভাতের যোগান দিতে পারিনি। কিন্তু এখন পরিবারে এসেছে আর্থিক স্বচ্ছলতা। কুড়ে ঘরের পরিবর্তে নির্মাণ করেছি আধাপাকা ঘর। বিদ্যুতের সুবিধা না পেলেও বাড়িতে লাগিয়েছি সৌরবিদ্যুৎ। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ যোগাতে এখন আর চিন্তা করতে হয় না। উস্তা চাষে আমার ভাগ্য বদলে দিয়েছে”। হাসি মুখে কথাগুলো বললেন লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন।

আফজাল হোসেন বলেন, শুধু আমার একার নয়। সাত গ্রামের প্রায় ৫০০টি পরিবারে এখন সুখের সংসার। নড়াইলে উস্তা সবজিটিকে উচ্ছে বলা হয়।

উস্তা পল্লী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে নড়াইলের নলদী ইউনিয়নের জালালসী, নোয়াপাড়া, বারইপাড়া, গাছবাড়িয়া, মতিনগর, গ্রাম। এসব গ্রামের কৃষকদের দেখে পাশের নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের ব্রাহ্মণডাঙ্গা, বাড়িভাঙ্গা, রায়গ্রাম, কলাগাছিসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৭৫টি কৃষি পরিবার এবার উস্তা চাষে উৎসাহিত হয়ে লাভবান হয়েছেন।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ৪২৫ হেক্টর জমিতে উস্তার আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামে ১২০ হেক্টর জমিতে উচ্ছে চাষ হয়েছে। প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার মন উচ্ছে তোলা হচ্ছে জমি থেকে।

কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, শুরুতে ব্যাপারিরা কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা করে দাম দিয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ২৫ থেকে ২৮ টাকা দরে দাম দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ৮ থেকে ১০ বছর ধরে এক একর ৮০ শতাংশ জমিতে উচ্ছে চাষ করে আসছি। গত বছর খরচ বাদে দেড় লাখ টাকা লাভ হয়েছিল। জমিতে ভাইরাস লাগায় এবার হয়তো বেশি লাভ হবে না। তিনি বলেন, আমার মতো সাত গ্রামের প্রায় ৫০টি কৃষি পরিবার উচ্ছে চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

jagonews24

জালালসী গ্রামের রোস্তম মোল্যা বলেন, মৌসুমি ফসল লাগিয়ে লাভবান হতে দেখে পাশের নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের ব্রাহ্মণডাঙ্গা, বাড়িভাঙ্গা, রায়গ্রাম, কলাগাচিসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষকরাও আগ্রহী হয়ে এবার উচ্ছে চাষ করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এসব এলাকার চাষিরা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জমি থেকে উস্তা তোলার কাজে ব্যস্ত। চাষিদের স্ত্রী ও সন্তানরাও জমি থেকে উস্তা তুলছেন।

এলাকার অসহায় ও দরিদ্ররাও উস্তা তুলে জীবিকা নির্বাহ করছেন। উস্তা পল্লীতে গড়ে উঠেছে ১২ থেকে ১৫টি অস্থায়ী বাজার। কৃষকরা জমি থেকে উস্তা তুলে সেই বাজারেই বিক্রি করেন। বিভিন্ন জেলা থেকে ২০ থেকে ২৫ জন ব্যাপারি এসব উচ্ছে কিনে ঢাকা, মাগুরা, ফরিদপুর, যশোর, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করেন।

যশোর বাঘারপাড়া উপজেলার দরাজহাট গ্রামের ব্যাপারি বিলায়েত হোসেন বলেন, গত বছরও দুই থেকে আড়াই হাজার মণ উস্তা কেনাবেচা হয়েছে। কিন্তু এবার জমিতে ভাইরাস লাগায় ফলন একটু কম হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর নড়াইলের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় জানান ধান ও পাট চাষের তুলনায় উচ্ছে চাষে বেশি লাভ পাওয়ায় এবং মাটি ও পরিবেশ অনুকূলে থাকায় কৃষকরা উচ্ছে চাষে ঝুঁকে পড়ছেন। লাভজনক এ চাষ সম্প্রসারণ করা হবে। তবে এ বছর অসময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে গাছের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।

নদী বন্দর / পিকে

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com