রাজধানীর সদরঘাট টার্মিনালে সকাল থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে। তবে স্বাভাবিকের তুলনায় যাত্রীর সংখ্যা অনেক কম। বিকেলে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীর চাপ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার (২৪ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, লালকুঠি থেকে বাদামতলী পর্যন্ত অর্ধশতাধিক লঞ্চ সদরঘাট টার্মিনালে নোঙর করা রয়েছে। এর মধ্যে চাঁদপুর, শরীয়তপুর, মুলাদীগামী পন্টুন থেকে ৩০ মিনিট পরপরই যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে প্রতিটি লঞ্চে অর্ধেক করে যাত্রী নিচ্ছেন লঞ্চ মালিকরা। এ জন্য ভাড়াও নেয়া হচ্ছে ৬০ ভাগ বেশি।
চাঁদপুরগামী একটি লঞ্চে পরিবার নিয়ে উঠেছেন যাত্রী তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ঈদে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় গ্রামে যেতে পারিনি। এখন লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ায় পরিবারের সবাইকে নিয়ে গ্রামে যাচ্ছি। তবে করোনার অজুহাতে ৬০ শতাংশ ভাড়া বেশি রাখছেন লঞ্চ মালিকরা।’
এ দিকে বিকেলে যেসব লঞ্চ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে (বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা) ছেড়ে যাবে সেগুলো ধোয়ামোছার কাজ করছেন শ্রমিকরা। কয়েকটি লঞ্চে ইঞ্জিন সার্ভিসিং করতেও দেখা গেছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার সদস্য গাজী সালাউদ্দিন বাবু বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৬টা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে। দেশের অন্যান্য টার্মিনাল থেকেও লঞ্চ সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। দুপুরের মধ্যে এসব লঞ্চ সদরঘাটে নোঙর করবে।’
স্বাভাবিকের তুলনায় এখন ঘাটে যাত্রীর সংখ্যা অনেক কম বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ঢাকা নদী বন্দরের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১৫টি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। প্রতিটি লঞ্চে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কি-না তা তদারকি করছি। ঘাটে যাত্রীর সংখ্যা কম থাকায় সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনেই লঞ্চে যাতায়াত করছেন।’
গত শনিবার (২১ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে ২৪ মে থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগের মতো লঞ্চ চলাচলের দাবি জানিয়েছিল বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থা। এ সময় লিখিত বক্তব্যে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বদিউজ্জামান বাদল ছয় দফা দাবিও জানিয়েছিলেন। তিনি শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-বােনাস দেয়ার জন্য সংস্থার পক্ষ হতে গত ৫ মে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান বরাবর প্রণোদনার জন্য যে আবেদন করা হয়েছে তা অনতিবিলম্বে মালিকদের মাঝে বন্টনের দাবি জানিয়েছেন। এ ছাড়া এনবিআরের ধারণক্ষমতার ওপর অগ্রিম প্রদত্ত ছয় মাসের ট্যাক্স আনুপাতিক হারে মওকুফ, বিআইডব্লিউটিএ’র ছয় মাসের কারভেন্সি ও বার্লিং চার্জ মওকুফ, নৌ পরিবহন অধিদফতরের ছয় মাসের সার্ভে ফি মওকুফ ও ব্যাংক লােনের ছয় মাসের সুদ মওকুফ করার দাবি জানান তিনি।
নদী বন্দর / পিকে