নৃত্য পরিচালক আমির হোসেন বাবু পরিকল্পনা করেছিলেন নৃতবিষয়ক একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করবেন। ছবির নাম হবে ‘নাচ ময়ূরী নাচ’। ছবিতে নায়ক চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি একজনকে মনোনীতও করেছিলেন। কিন্তু চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়ে উঠেনি।
এসময় জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা সালমান শাহ’র অকাল প্রয়াণে চলমান বেশ কিছু চলচ্চিত্রেরই কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
এর মধ্যে একটি ছিল ছটকু আহমেদ পরিচালিত ‘বুকের ভেতর আগুন’ চলচ্চিত্রটি। গল্পে কিছুটা পরিবর্তন করে অসমাপ্ত কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেন ছটকু আহমেদ। সেখানে সালমানের স্থলাভিষিক্ত হয়ে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন আজকের নন্দিত চিত্রনায়ক ফেরদৌস।
একই সময়ে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনায় বাসু চ্যাটার্জি নির্মাণ করেন ‘হঠাৎ বৃষ্টি’। এই ছবিতে অজিতের চরিত্রে অভিনয় করে দুই বাংলায় তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন ফেরদৌস।
আজ এই নায়কের জন্মদিন। এদিনে ভক্ত-অনুরাগীদের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন ফেরদৌস।
দেখতে দেখতে জীবনের ৪৮টি বছর শেষ হয়ে গেল। পা রাখলেন ৪৯ বছরে। অনুভূতিটা কেমন? ফেরদৌস বলেন, ‘প্রত্যেকটা বয়সের আলাদা সৌন্দর্য্য আছে। যখন বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঘুরার সময় তখন ঘুরেছি। আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যখন সময় কাটানো দরকার তখন কাটিয়েছি। সবসময় চেয়েছি নিজের মতো করে জীবনটাকে যাপন করতে।’
‘চেষ্টা করেছি সবসময় নিজের একটা স্বতন্ত্র ধারা তৈরি করতে। তবে অনেকেই আমাকে প্রেরণা দিয়েছেন। যেমন একজন মুসলিম হিসেবে আমার কাছে সেরা মানুষ মহানবী (স.)। উনার জীবন ও পরামর্শ আমাকে মানুষ হিসেবে সঠিক পথে থাকার দিক নির্দেশনা দেয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করি রাজনীতির ভাবনায়। আর আমার কাছে আমার বাবা পৃথিবীর সেরা বাবা। তার আদর্শকে লালন করে চলি সবসময়। আমি চেয়েছি একজন ভালো মানুষ হয়ে উঠতে। আর চলচ্চিত্রে এসেছি পৃথিবীর বুকে আমি যে ছিলাম তার একটা চিহ্ন রেখে যেতে। মৃত্যুর পরও মানুষ যেন আমাকে যুগ যুগ মনে রাখে সে ভাবনা থেকেই অভিনয় করে যাচ্ছি এখনো’- যোগ করেন ফেরদৌস।
জন্মদিনের বিশেষ স্মৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘স্মৃতি একেক সময় একেক রকম। প্রতিবার বাবাকে খুব মিস করি।’
চলচ্চিত্রে অভিনয়ের আগে ফেরদৌস একজন র্যাম্প মডেল হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেলের হাত ধরে র্যাম্প জগতে যাত্রা শুরু করেন তিনি। নব্বই দশকের শুরুতে বেশ কিছু বড় ফ্যাশন শো’র র্যাম্পিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন। বর্তমানে চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবেও কাজ করছেন তিনি।
বাংলাদেশের পাশাপাশি এক ডজনেরও বেশি কলকাতার সিনেমায় কাজ করেছেন ফেরদৌস। তারমধ্যে অনেক সিনেমাই সুপারহিট হয়েছে। বলিউডের একটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন তিনি। সে ছবির নাম ‘মিট্টি’।
চলচ্চিত্র জীবনে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ আরও অনেক পুরস্কার জিতে নিয়েছেন, দেশে বিদেশে সম্মান কুড়িয়েছেন ফেরদৌস।
চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেও ফেরদৌস সফল হয়েছেন। তার প্রতিষ্ঠান ‘সিনেমা স্কোপ’ এর প্রযোজনায় দুটি চলচ্চিত্র নির্মিত। এদের একটি ইমতিয়াজ নেয়ামুলের পরিচালনায় ‘এক কাপ চা’ নির্মানাধীন এবং অন্যটি বাসু চ্যাটার্জীর পরিচালনায় ‘হঠাৎ সেদিন’ ২০১৩ সালে মুক্তি পেয়েছে।
বর্তমানে তিনি জ্যাম ও গাঙচিল শিরোনামের দুটো ছবিতে কাজ করছেন কিন্তু করোনা প্রভাবের জন্য আটকে আছে শুটিং।
নদী বন্দর / জিকে